কানাডার ঐক্য: এক বিভ্রমের গল্প?

কানাডার ঐক্য: বিভক্তির আশঙ্কা বাড়ছে?

সাম্প্রতিক এক নিবন্ধে আল জাজিরায় প্রকাশিত হয়েছে, কানাডার জাতীয় ঐক্যের ধারণাটি বর্তমানে প্রশ্নের সম্মুখীন। বিশেষ করে দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশগুলোতে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপনের প্রবণতা বাড়ছে, যা উদ্বেগের কারণ। নিবন্ধটিতে প্রধানত এই বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে।

কানাডা একটি ফেডারেল রাষ্ট্র, যেখানে কেন্দ্রীয় সরকার এবং প্রদেশগুলোর মধ্যে ক্ষমতা ভাগাভাগি করা হয়। যেমন, বাংলাদেশের মতো এখানেও কেন্দ্রীয় সরকারের পাশাপাশি প্রাদেশিক সরকারগুলোর নিজস্ব স্বায়ত্তশাসন রয়েছে। তবে, কানাডার পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশগুলোতে, বিশেষ করে আলবার্টায়, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ঝুঁকতে দেখা যাচ্ছে। এর পেছনে বিভিন্ন কারণ রয়েছে।

এই প্রেক্ষাপটে, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বক্তব্য বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তার কিছু নীতি এবং বক্তব্য কানাডার কিছু মানুষের মধ্যে প্রভাব ফেলেছে। তারা মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যুক্ত হলে তাদের সুবিধা হবে। যদিও কানাডার সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ এখনো তাদের সার্বভৌমত্ব রক্ষার পক্ষে, কিছু অংশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক গভীর করতে আগ্রহী।

সম্প্রতি প্রকাশিত একটি জরিপে দেখা গেছে, দেশটির রক্ষণশীল ভোটারদের মধ্যে প্রায় ১৮ শতাংশ এবং আলবার্টার ২১ শতাংশ মানুষ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। এই প্রবণতা কানাডার রাজনৈতিক অঙ্গনে গভীর উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।

আলবার্টা হলো কানাডার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রদেশ, যা তেল উৎপাদনে সমৃদ্ধ। এখানকার মানুষের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র-প্রীতি দেখা যাওয়ার কারণ হিসেবে অনেকে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি অসন্তুষ্টিকে দায়ী করেন। তারা মনে করেন, কেন্দ্রীয় সরকার তাদের অধিকারের প্রতি যথেষ্ট মনোযোগ দেয় না। এর ফলে তারা নিজেদের বিচ্ছিন্ন এবং কোণঠাসা অবস্থায় অনুভব করেন।

কানাডার রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, এই পরিস্থিতিতে দেশটির রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য জরুরি। বিভেদ দূর করতে এবং দেশের অখণ্ডতা রক্ষায় সকলকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

কানাডার এই সংকট দেশটির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। যদি বিভেদ বাড়তে থাকে এবং পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ নিজেদের দেশের বাইরে ভাবতে শুরু করে, তবে তা দেশের জন্য অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে। তাই, ঐক্যবদ্ধভাবে সংকট মোকাবিলার কোনো বিকল্প নেই।

তথ্যসূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *