কানাডার দাবানলের ধোঁয়া এবং সাহারা মরুভূমির ধূলিকণা, উভয়ই মিলিতভাবে উত্তর আমেরিকার পূর্বাঞ্চলে বায়ুর গুণমানকে আরও খারাপ করে তুলছে। এই ঘটনার কারণে সেখানকার লক্ষ লক্ষ মানুষের স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ার সম্ভবনা দেখা দিয়েছে।
পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, সেখানকার আকাশ ঘোলাটে হয়ে আসছে এবং শ্বাসকষ্টের মতো সমস্যাগুলোও বাড়ছে।
কানাডার বিভিন্ন প্রদেশে শতাধিক স্থানে এখনো দাবানল জ্বলছে। ব্রিটিশ কলাম্বিয়া থেকে শুরু করে অন্টারিও পর্যন্ত বিস্তৃত এই আগুনে ইতোমধ্যে হাজার হাজার মানুষকে ঘরবাড়ি ছাড়তে হয়েছে।
গত এক সপ্তাহে সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে ম্যানিটোবা এবং সাসকাচুয়ান প্রদেশে। এই দাবানলের ধোঁয়া দ্রুত কানাডা এবং যুক্তরাষ্ট্রের আকাশে ছড়িয়ে পড়েছে।
গত বৃহস্পতিবার এর বিস্তার টেক্সাসের দ্বিগুণ এলাকা জুড়ে ছিল।
অন্যদিকে, আটলান্টিক মহাসাগর পাড়ি দিয়ে সাহারা মরুভূমি থেকে আসা ধূলিকণার একটি বিশাল স্তরও যুক্তরাষ্ট্রের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, এই ধূলিকণাগুলো বুধবারের মধ্যে ফ্লোরিডায় পৌঁছাবে এবং বৃহস্পতিবার নাগাদ দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ছড়িয়ে পড়বে।
ফলে, এই দুটি ঘটনার মিশ্রণে ঐ অঞ্চলের বায়ুর গুণগত মান আরও খারাপ হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দাবানলের ধোঁয়ায় থাকা PM2.5 নামক অতি ক্ষুদ্র কণা মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর। এগুলো ফুসফুসের গভীরে প্রবেশ করতে পারে এবং শ্বাসকষ্টের সমস্যা তৈরি করতে পারে।
এছাড়াও, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যাকে আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের অনেক অঞ্চলে ইতোমধ্যে এই ধোঁয়ার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। মিনিয়াপলিসে বায়ুর গুণমান ‘অস্বাস্থ্যকর’ পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিল।
সেখানকার দৃশ্যমানতা এতটাই কমে গিয়েছিল যে শহরের আকাশ পর্যন্ত ভালোভাবে দেখা যাচ্ছিল না।
আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, সাহারান ডাস্ট বা সাহারার ধূলিকণার কারণেও শ্বাসকষ্টের সমস্যা হতে পারে। বিশেষ করে যাদের শ্বাসকষ্ট বা ফুসফুসের সমস্যা আছে, তাদের জন্য এই ধূলিকণা আরও বেশি ক্ষতিকর।
যদিও এই মুহূর্তে ঘটনাটি ঘটছে উত্তর আমেরিকায়, তবে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটেও এর গুরুত্ব রয়েছে। ঢাকা ও অন্যান্য শহরে বায়ুদূষণ একটি গুরুতর সমস্যা।
শীতকালে এই সমস্যা আরও বাড়ে। বাতাসে ক্ষতিকর বস্তুকণার (যেমন PM2.5) উপস্থিতিও উদ্বেগের কারণ।
তাই, এই ধরনের আন্তর্জাতিক ঘটনাগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে, আমাদের দেশেও বায়ু দূষণ রোধে আরও সচেতন হতে হবে এবং কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন