ফ্লোরিডায় কানাডীয় পর্যটকদের আনাগোনা, ট্রাম্পের মন্তব্যের জেরে?!

ফ্লোরিডায় কানাডীয় পর্যটকদের আগমন কমেছে? – এমন একটি দাবির সত্যতা যাচাই।

যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার মধ্যে বিদ্যমান রাজনৈতিক টানাপোড়েনের জেরে ফ্লোরিডায় কানাডীয় পর্যটকদের আগমন উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে কিনা, তা নিয়ে সম্প্রতি আলোচনা চলছে। বিষয়টির সত্যতা যাচাই করতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে, ফ্লোরিডায় কানাডীয় পর্যটকদের আনাগোনা কিছুটা কমলেও, দেশটির একজন কংগ্রেস সদস্যের করা দাবির মতো এতটা হ্রাসের প্রমাণ মেলেনি।

যুক্তরাষ্ট্রের একজন কংগ্রেসম্যান, জ্যারেড মোস্কোভিটজ, দাবি করেছেন যে ট্রাম্প প্রশাসনের নীতির কারণে ফ্লোরিডায় কানাডীয় পর্যটকদের আগমন ৮০ শতাংশ পর্যন্ত কমে গেছে। কিন্তু বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এই দাবিটি সম্ভবত অতিরঞ্জিত।

বিমান সংস্থা ও পর্যটন বিষয়ক বিভিন্ন সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, পর্যটকদের সংখ্যা কমেছে ঠিকই, তবে তা বিভিন্ন অঞ্চলে ৫ শতাংশ থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৪৩ শতাংশ পর্যন্ত।

ফ্লোরিডার পর্যটন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে প্রায় ৩.২৭ মিলিয়ন কানাডীয় পর্যটক ফ্লোরিডা ভ্রমণ করেছেন, যা রাজ্যটিতে আসা মোট পর্যটকদের প্রায় ২ শতাংশ।

এর মধ্যে প্রায় ২.১ মিলিয়ন পর্যটক আকাশপথে এবং ১.১ মিলিয়ন অন্যান্য মাধ্যমে ফ্লোরিডায় গিয়েছেন।

বিমান সংস্থাগুলির তথ্য বলছে, এপ্রিল মাসে কানাডা থেকে ফ্লোরিডাগামী বিমানের টিকিট বুকিং কমেছে, তবে তা মোস্কোভিটজের দাবির থেকে অনেক কম।

ওএজি নামক একটি বিমান চলাচল বিষয়ক সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, পুরো যুক্তরাষ্ট্র-কানাডা রুটে টিকিট বুকিং কমেছে প্রায় ৭৬ শতাংশ। তবে ফ্লোরিডার ক্ষেত্রে এই সংখ্যা সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়নি।

পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ফ্লোরিডার কিছু বিমানবন্দরে কানাডীয় পর্যটকদের আগমন উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে।

উদাহরণস্বরূপ, ফোর্ট লডারডেল-হলিউড আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কানাডার বিমান সংস্থাগুলোর যাত্রী আগমন কমেছে প্রায় ২০ শতাংশ, এবং অরল্যান্ডো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কমেছে ১২ শতাংশ।

মিয়ামি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তথ্য বলছে, জানুয়ারি থেকে এপ্রিল মাসের মধ্যে কানাডা থেকে আসা যাত্রীর সংখ্যা কমেছে প্রায় ৬ শতাংশ।

রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে অনেক কানাডীয় পর্যটকদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা গেছে।

তাঁরা মনে করছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের নীতির কারণে যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ করা নিরাপদ নয়। এই কারণে অনেকে তাঁদের ফ্লোরিডা ভ্রমণের পরিকল্পনা বাতিল করেছেন।

তবে, পর্যটকদের সংখ্যা হ্রাসের মূল কারণ রাজনৈতিক নাকি অন্য কিছু, তা এখনো নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।

বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, কানাডীয় পর্যটকদের আগমন কমলেও, কংগ্রেসম্যান মোস্কোভিটজের ৮০ শতাংশ হ্রাসের দাবিটি সঠিক নয়।

তথ্য যাচাইকারী সংস্থাগুলো এই দাবিকে ‘প্রায় মিথ্যা’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

তথ্যসূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *