ক্যান্ডি মন্টোগোমারি: কীভাবে একটি কুঠার দিয়ে খুন, তারপর জীবন?

শিরোনাম: টেক্সাসের আলোচিত হত্যাকাণ্ড: ঘটনার ৪৪ বছর পর, কোথায় আছেন ক্যান্ডি ও অন্যান্যরা?

১৯৮০ সালে টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের একটি হত্যাকাণ্ড ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। ক্যান্ডি মন্টোগোমারি নামের এক গৃহবধূ তার বন্ধু বেটি গোরকে কুঠার দিয়ে হত্যা করে।

এই ঘটনার পর ক্যান্ডি ও তার স্বামী প্যাট মন্টোগোমারি এবং নিহত বেটির স্বামী অ্যালান গোর-কে নিয়ে শুরু হয় আলোচনা।

ঘটনার ৪৪ বছর পর, এই মামলার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা এখন কেমন জীবন যাপন করছেন, আসুন জেনে নেওয়া যাক।

ক্যান্ডি ও প্যাট মন্টোগোমারি ছিলেন টেক্সাসের উইলি শহরের বাসিন্দা। তারা স্থানীয় চার্চে সক্রিয় ছিলেন এবং তাদের একটি সুখী পরিবারের পরিচিতি ছিল।

১৯৭০-এর দশকে তাদের বিয়ে হয়। ক্যান্ডি ছিলেন একজন সাধারণ গৃহিণী, এবং প্যাট টেক্সাস ইনসট্রুমেন্টস-এর একজন প্রকৌশলী হিসেবে কাজ করতেন।

তাদের একটি ছেলে ও একটি মেয়ে ছিল।

ঘটনার সূত্রপাত হয় যখন ক্যান্ডি, বেটির স্বামী অ্যালান গোরের সঙ্গে বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কে জড়ান। ১৯৭৮ সালের ডিসেম্বরে তাদের সম্পর্কের শুরু হয় এবং বেশ কয়েক মাস ধরে এটি চলেছিল।

পরে, তাদের মধ্যে সম্পর্ক ভেঙে যায়।

১৯৮০ সালের ১৩ই জুন, অ্যালান যখন ব্যবসার কাজে বাইরে ছিলেন, তখন বেটিকে কুঠার দিয়ে হত্যা করা হয়।

ঘটনার দিন অ্যালান যখন বারবার তার স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন, তখন তিনি ক্যান্ডিকে ফোন করেন।

ক্যান্ডি তখন অ্যালানের মেয়ে আলিসাকে দেখভাল করছিলেন এবং তিনি অ্যালানকে জানান যে সব ঠিক আছে।

পরে প্রতিবেশীরা বেটির বাড়িতে গিয়ে তাকে মৃত অবস্থায় খুঁজে পান।

এই হত্যাকাণ্ডের পর, ক্যান্ডিকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং তার বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনা হয়।

যদিও প্রথমে তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন, কিন্তু পরে জানা যায় যে, বেটির সঙ্গে তার ঝগড়া হয়েছিল এবং সেই সময় আত্মরক্ষার জন্য তিনি বেটিকে কুঠার দিয়ে আঘাত করেন।

মামলার শুনানিতে ক্যান্ডি দাবি করেন যে, বেটি প্রথমে অ্যালানের সঙ্গে তার সম্পর্কের বিষয়ে জানতে পারেন এবং এর জের ধরে তাদের মধ্যে মারামারি হয়।

আত্মপক্ষ সমর্থনে তিনি বলেন, বেটিই প্রথমে কুঠার হাতে তাকে আক্রমণ করতে উদ্যত হয়েছিলেন।

এর পরেই আত্মরক্ষার্থে তিনি বেটিকে হত্যা করেন। ১৯৭৮ সালের ২৯শে অক্টোবর, আদালত ক্যান্ডিকে নির্দোষ ঘোষণা করে।

এই ঘটনার পর, ক্যান্ডি ও প্যাট মন্টোগোমারি তাদের সন্তানদের নিয়ে জর্জিয়ায় চলে যান। পরে তাদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়।

ক্যান্ডি পরবর্তীতে কাউন্সেলিং বিষয়ে পড়াশোনা করেন এবং এখন তিনি ক্যান্ডিস হুইলার নামে পরিচিত।

অন্যদিকে, অ্যালান গোর ক্যান্ডির বিচার শেষ হওয়ার কয়েক মাসের মধ্যেই পুনরায় বিয়ে করেন। তবে, তাদের মধ্যে বিচ্ছেদ হয়।

বেটির বাবা-মা তাদের দুই নাতনি আলিসা ও বেথানিকে লালন-পালন করেন। বর্তমানে, আলিসা ও বেথানির একটি স্থিতিশীল জীবন রয়েছে।

টেক্সাসের এই চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ড নিয়ে পরবর্তীতে বেশ কয়েকটি সিনেমা ও টিভি সিরিজ নির্মিত হয়েছে, যা আজও মানুষের মনে কৌতুহল সৃষ্টি করে।

তথ্য সূত্র: পিপল ম্যাগাজিন, টেক্সাস মান্থলি, দ্য ডালাস মর্নিং নিউজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *