আতঙ্ক! ওরেগনে তীরে উঠল ‘ভয়ংকর দাঁতওয়ালা’ বিরল মাছ!

অদ্ভুত দর্শন এক সামুদ্রিক মাছ, যার পোশাকি নাম ‘লংনোজ ল্যানসেটফিশ’। সম্প্রতি ওরেগন অঙ্গরাজ্যের একটি সমুদ্র সৈকতে এটিকে পাওয়া গেছে, যা জীববিজ্ঞানীদের কাছে কৌতূহলের সৃষ্টি করেছে। প্রায় পাঁচ ফুট লম্বা এই মাছটি দেখতে যেমন ভয়ঙ্কর, তেমনই তার খাদ্যভ্যাসও বেশ চমকপ্রদ।

মাংসাশী এই মাছটি নিজের প্রজাতিসহ অন্যান্য সামুদ্রিক প্রাণী ভক্ষণ করে থাকে, যে কারণে একে ‘ক্যানিবাল ফিশ’ বা ‘নরখাদক মাছ’ নামেও ডাকা হয়।

গত ২২শে এপ্রিল, ওরেগনের সি-সাইড অ্যাকুরিয়ামের কর্মীরা সমুদ্রের তীরে মাছটিকে খুঁজে পান। অ্যাকুরিয়ামের সহকারী ব্যবস্থাপক টিফানি বুথে জানান, সাধারণত এই অঞ্চলের আশেপাশে এই মাছ দেখা যায় না।

তিনি আরও জানান, গভীর সমুদ্রের বাসিন্দা হওয়ায় সাধারণত এদের পুরো শরীর অক্ষত অবস্থায় পাওয়া কঠিন। “যখন তারা ছবি দেখায়, তখন আমরা নিশ্চিত হয়েছিলাম যে এটি একটি বিশেষ নমুনা এবং আমরা এটি সংগ্রহ করার সিদ্ধান্ত নিই,” বুথে বলেন।

লংনোজ ল্যানসেটফিশ-এর শরীর জেলির মতো নরম হয়ে থাকে, যা সৈকতে আসা পাখির খুব প্রিয় খাদ্য। এই কারণে এদের সতেজ এবং অক্ষত অবস্থায় খুঁজে পাওয়া বেশ কঠিন।

বুথে আরও জানান, মাছটি দেখতে খুব একটা বন্ধুত্বপূর্ণ নয় এবং জীবিত অবস্থায় দেখলে তিনি সম্ভবত ছুঁতেও চাইতেন না।

মাছটির পাকস্থলী পরীক্ষা করে বিজ্ঞানীরা এর খাদ্যভ্যাস সম্পর্কে আরও তথ্য জানতে পেরেছেন। তারা দেখেছেন, এই মাছ বিভিন্ন সামুদ্রিক প্রাণী, যেমন— স্কুইড, অক্টোপাস এবং অন্যান্য মাছ খেয়ে থাকে।

এমনকি তারা প্লাস্টিকও খেয়ে থাকে, যা পরিবেশ দূষণের একটি গুরুতর চিত্র তুলে ধরে। বিজ্ঞানীরা মনে করেন, এদের এই অদ্ভুত খাদ্যভ্যাসের কারণে এদের পাকস্থলীর গঠন এবং হজম ক্ষমতা দুর্বল।

লংনোজ ল্যানসেটফিশ সাধারণত গভীর সমুদ্রের অন্ধকারে বাস করে, যেখানে সূর্যের আলো পৌঁছায় না। এই অঞ্চলটিকে ‘টুইলাইট জোন’ বা ‘গোধূলি অঞ্চল’ হিসেবেও অভিহিত করা হয়।

এদের বিশাল চোখ, ধারালো দাঁত এবং সাপের মতো শরীর অন্যান্য মাছ থেকে এদেরকে আলাদা করে। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, তারা এখনো এই মাছ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানার চেষ্টা করছেন।

এদের আচরণ এবং গভীর সমুদ্রের বাস্তুসংস্থানে এদের ভূমিকা নিয়ে গবেষণা চলছে।

যদিও প্রতি বছর অ্যাকুরিয়ামে হাতে গোনা কয়েকটা ল্যানসেটফিশ পাওয়া যায়, তবে বুথে জানিয়েছেন, তারা এখন পর্যন্ত এক ঘণ্টার বেশি কোনো মাছকে বাঁচিয়ে রাখতে পারেননি।

তবে, নব্বইয়ের দশকে পাওয়া প্রথম ল্যানসেটফিশটিকে ট্যাক্সিডার্মি করে সংরক্ষণ করা হয়েছে।

তথ্য সূত্র: পিপলস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *