আশ্চর্যজনক! সাদা-মুখের ক্যাপুচিন বানরের দল হাউলার বানরের বাচ্চাদের ধরে নিয়ে যাচ্ছে!

পানামার একটি দ্বীপে বানরদের অদ্ভুত আচরণ, হনুমান শাবকদের অপহরণ!

পানামার উপকূলের একটি ছোট দ্বীপ, জিকারনে, শ্বেত-মুখো ক্যাপুচিন বানরদের মধ্যে এক উদ্বেগজনক প্রবণতা দেখা দিয়েছে। এখানকার পুরুষ বানররা হনুমান প্রজাতির শিশুদের অপহরণ করে চলেছে, যা প্রাণীবিদদের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে।

সম্প্রতি প্রকাশিত একটি গবেষণায় জানা গেছে, এই বানরগুলো হনুমান শাবকদের তাদের পিঠে করে নিয়ে যায়, যা আগে কখনো দেখা যায়নি।

গবেষণাটি পরিচালনা করেছেন ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক ইনস্টিটিউট অফ অ্যানিমেল বিহেভিয়ার এবং স্মিথসোনিয়ান ট্রপিক্যাল রিসার্চ ইনস্টিটিউটের গবেষক জোয়ে গোল্ডসবোরো। তিনি জানান, ২০১৯ সাল থেকে ক্যামেরার মাধ্যমে বানরদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছিল।

“জোকর” নামে পরিচিত একটি বানর, যার মুখে একটি দাগ ছিল, এই অদ্ভুত আচরণের মূল হোতা। জোকর এবং অন্যান্য বানরদের হনুমান শিশুদের অপহরণ করতে দেখা গেছে।

গবেষণায় দেখা গেছে, ২০২২ সালের জানুয়ারি মাস থেকে ২০২৩ সালের মার্চের মধ্যে ১৫ মাসের ব্যবধানে অন্তত ১১টি হনুমান শাবককে অপহরণ করা হয়েছে।

এই শিশুদের সম্ভবত খাদ্যের অভাবে মৃত্যু হয়েছে। কারণ ক্যাপুচিন বানরদের শিশুদের দেখাশোনার কোনো অভিজ্ঞতা নেই। গবেষকরা বলছেন, বানরদের এই আচরণ সম্ভবত কৌতূহল বা একঘেয়েমির ফল।

দ্বীপটিতে শিকারীর অভাব এবং পর্যাপ্ত খাদ্য থাকার কারণে তারা সম্ভবত নতুন কিছু করার চেষ্টা করছে।

গবেষকদের মতে, ক্যাপুচিন বানররা সাধারণত তাদের নিজেদের প্রজাতির শিশুদের প্রতি আকৃষ্ট হয়। তারা সম্ভবত শিশুদের সঙ্গে খেলা করতে বা তাদের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করতে চায়।

তবে হনুমান শিশুদের অপহরণ করার পেছনে অন্য কোনো কারণ থাকতে পারে।

এই ঘটনার ফলে জিকারন দ্বীপে বসবাসকারী হনুমান প্রজাতি হুমকির মুখে পড়েছে। হনুমান একটি বিপন্ন প্রজাতি এবং তাদের জনসংখ্যা কমে যাওয়া উদ্বেগের কারণ।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, তারা এই বিষয়ে গভীর পর্যবেক্ষণ করছেন এবং প্রকৃতির স্বাভাবিক আচরণে হস্তক্ষেপ করতে চান না। তবে তারা আশা করছেন, হনুমানরা হয়তো এই পরিস্থিতি থেকে নিজেদের রক্ষা করার জন্য কোনো কৌশল তৈরি করতে পারবে।

এই গবেষণাটি প্রাণীবিজ্ঞানের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি বানরদের আচরণ এবং তাদের সামাজিক জীবন সম্পর্কে নতুন ধারণা তৈরি করেছে। ভবিষ্যতে এই ধরনের গবেষণা বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে সহায়ক হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

তথ্য সূত্র: ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *