যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে গাড়ি ও যন্ত্রাংশের ওপর শুল্ক বৃদ্ধির সিদ্ধান্তের ফলে বিশ্বজুড়ে গাড়ির দাম বাড়তে পারে, যার প্রভাব পড়তে পারে বাংলাদেশের বাজারেও। সম্প্রতি সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেওয়া এই সিদ্ধান্তের কারণে খুব শীঘ্রই গাড়ির দাম কয়েক হাজার ডলার পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এই শুল্ক বৃদ্ধির ফলে শুধু আমদানি করা গাড়িই নয়, বরং আমেরিকাতে তৈরি হওয়া গাড়ির উৎপাদন খরচও বাড়বে, যার ফলস্বরূপ গাড়ির চূড়ান্ত মূল্যেও পরিবর্তন আসবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই শুল্ক বৃদ্ধির কারণে গাড়ির দাম বাড়তে খুব বেশি সময় লাগবে না। এমনকি, ডিলারদের কাছে নতুন গাড়ি আসার আগেই দাম বাড়তে শুরু করতে পারে।
এর কারণ হিসেবে তারা উল্লেখ করেছেন, গাড়ির ডিলাররা তাদের পুরনো মজুদ করা গাড়ির দামও বাড়িয়ে দিতে পারেন, কারণ তারা জানেন যে নতুন করে গাড়ি কিনলে তাদের বেশি দামে কিনতে হবে। এমন পরিস্থিতিতে গাড়ির সরবরাহ কমে গেলে দাম আরও বাড়তে পারে।
এই শুল্ক বৃদ্ধির মূল কারণ হলো, যুক্তরাষ্ট্র সরকার চাইছে তাদের দেশে গাড়ির উৎপাদন বাড়াতে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, আমেরিকার তৈরি অনেক গাড়িতেই কানাডা ও মেক্সিকো থেকে আমদানি করা যন্ত্রাংশ ব্যবহার করা হয়।
তাই শুল্ক আরোপের ফলে সেই সব গাড়ির উৎপাদন খরচও বাড়বে। উদাহরণস্বরূপ, যদি একটি “আমেরিকান” গাড়ির যন্ত্রাংশের প্রায় অর্ধেক অন্য দেশ থেকে আসে, তবে সেই গাড়ির উৎপাদন খরচ প্রায় ৫,০০০ ডলার পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই শুল্কের কারণে গাড়ির উৎপাদন কমতে পারে, যা বাজারে গাড়ির সংকট তৈরি করতে পারে। এর ফলস্বরূপ, গাড়ির দাম আরও বাড়তে পারে।
যেমনটা দেখা গিয়েছিল ২০২১ সালে, যখন চিপ সংকটের কারণে গাড়ির উৎপাদন কমে গিয়েছিল এবং নতুন ও পুরনো গাড়ির দাম উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছিল।
যদিও এই শুল্কের সরাসরি প্রভাব এখনো বাংলাদেশে দৃশ্যমান নয়, তবে বিশ্ব অর্থনীতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে গিয়ে বাংলাদেশের গাড়ি বাজারও এর দ্বারা প্রভাবিত হতে পারে।
বিশেষ করে, যদি বাংলাদেশ সরাসরি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা বা মেক্সিকো থেকে গাড়ি আমদানি করে, অথবা গাড়ির যন্ত্রাংশ আমদানি করে, তাহলে দাম বৃদ্ধির একটা আশঙ্কা থেকেই যায়।
এছাড়াও, বিশ্ব বাজারে গাড়ির দাম বাড়লে, বাংলাদেশের ব্যবহৃত গাড়ির বাজারেও এর প্রভাব পড়তে পারে।
গাড়ি শিল্পের সঙ্গে জড়িত বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের শুল্কনীতি বিশ্ব বাণিজ্য এবং গাড়ির বাজারের স্থিতিশীলতার জন্য উদ্বেগের কারণ। তাই, গাড়ির দামের এই সম্ভাব্য ঊর্ধ্বগতি সম্পর্কে অবগত থাকা এবং বাজারের গতিবিধির ওপর নজর রাখা জরুরি।
তথ্য সূত্র: সিএনএন