প্রকাশ্যে! নারীদের রূপচর্চার পণ্যে ‘ক্যান্সার’ !

কার্সিনোজেন (Cancer-causing) যুক্ত রাসায়নিকের উপস্থিতি, যা সাধারণত সৌন্দর্য্য সামগ্রীতে ব্যবহৃত হয়, তা নিয়ে নতুন একটি গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে। এই গবেষণায় দেখা গেছে, বিশেষ করে কৃষ্ণাঙ্গ ও ল্যাটিনা নারীদের ব্যবহৃত কিছু পণ্যে এই ক্ষতিকর উপাদানের সন্ধান পাওয়া গেছে।

পরিবেশ বিজ্ঞান ও টক্সিকোলজি লেটার্স নামক জার্নালে ৭ই মে প্রকাশিত এই গবেষণায় বলা হয়েছে, এইসব পণ্যের মধ্যে ফর্মালডিহাইড নির্গত করার মতো রাসায়নিক বিদ্যমান।

গবেষণাটি পরিচালনা করেছে সাইলেন্ট স্প্রিং ইনস্টিটিউট। তাদের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, কৃষ্ণাঙ্গ ও ল্যাটিনা নারীদের ব্যবহৃত সৌন্দর্য্য পণ্যের অর্ধেকেরও বেশি পরিমাণে এই ধরনের রাসায়নিক পাওয়া গেছে।

ত্বকচর্চার (স্কিন কেয়ার) প্রায় ৪৭ শতাংশ এবং চুলের (হেয়ার কেয়ার) প্রায় ৫৮ শতাংশ পণ্যে এই উপাদানগুলো রয়েছে। গবেষকরা জানিয়েছেন, এই রাসায়নিকগুলো শ্যাম্পু, লোশন, সাবান এবং এমনকি চোখের পাপড়ির আঠাতেও পাওয়া গেছে।

ফর্মালডিহাইড মূলত পণ্য সংরক্ষণের জন্য ব্যবহার করা হয়, যা পণ্যের শেলফ লাইফ বাড়ায়। কিন্তু এটি মানবদেহের জন্য অত্যন্ত বিষাক্ত এবং ক্যান্সার সৃষ্টিকারী হিসেবে চিহ্নিত।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন ২০০৯ সালে এই রাসায়নিকের ব্যবহার নিষিদ্ধ করে।

গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে, এই ধরনের রাসায়নিকের কারণে স্বাস্থ্য ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে। বারবার ব্যবহারের ফলে শরীরে এর ক্ষতিকর প্রভাব জমা হতে থাকে।

যদিও এই গবেষণাটি সীমিত সংখ্যক (৭০ জন) নারীর ওপর করা হয়েছে, তবে এটি সৌন্দর্য্য পণ্যের উপাদান এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষার দিকটি আরও একবার সামনে নিয়ে এসেছে।

গবেষকরা বলছেন, অনেক সময় পণ্যের উপাদান তালিকায় এই রাসায়নিকের সরাসরি উল্লেখ থাকে না। এর বদলে ‘ডিএমডিএম হাইড্রানটোইন’-এর মতো রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়, যা ফর্মালডিহাইড নির্গত করে।

তাই, উপাদান তালিকা ভালোভাবে দেখে পণ্য কেনা গুরুত্বপূর্ণ।

বাংলাদেশেও সৌন্দর্য্য সামগ্রীর বাজার বাড়ছে। বাজারে বিভিন্ন ধরনের প্রসাধনী সহজলভ্য হওয়ায়, মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো জরুরি।

বিশেষ করে, এইসব পণ্যের উপাদান সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে, নির্ভরযোগ্য ব্র্যান্ডের পণ্য কেনা উচিত। এছাড়া, সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত, বাজারে উপলব্ধ পণ্যের গুণগত মান নিয়মিতভাবে পরীক্ষা করা, যাতে ভোক্তারা স্বাস্থ্য ঝুঁকি থেকে মুক্ত থাকতে পারে।

তথ্য সূত্র: পিপল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *