কার্ডিফের মর্মান্তিক ঘটনা: ই-বাইক দুর্ঘটনায় কিশোরদের মৃত্যু, পুলিশের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা?

কার্ডিফে ই-বাইক দুর্ঘটনায় দুই কিশোরের মৃত্যুর ঘটনায় জড়িত পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ আনা হচ্ছে না। ব্রিটিশ গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের মে মাসে ওয়েলসের কার্ডিফে ১৫ বছর বয়সী হার্ভে ইভান্স এবং ১৬ বছর বয়সী কাইরিস সুলিভানের ই-বাইক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।

দুর্ঘটনার কয়েক মুহূর্ত আগে একটি পুলিশ ভ্যানকে তাদের অনুসরণ করতে দেখা যায়।

ঘটনার তদন্ত শেষে ব্রিটিশ কৌঁসুলি বিভাগ (Crown Prosecution Service – CPS) ঘোষণা করেছে যে, এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত কোনো পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তারা ফৌজদারি অভিযোগ আনবে না। কর্তৃপক্ষের মতে, অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ‘বেপরোয়া গাড়ি চালানো’র অভিযোগ প্রমাণ করার মতো পর্যাপ্ত সাক্ষ্য-প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

সিপিএস-এর বিশেষ অপরাধ বিভাগের প্রধান ম্যালকম ম্যাকহ্যাফি জানান, “আমরা নিহত দুই কিশোরের পরিবার ও বন্ধুদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। দুর্ঘটনার তদন্তে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে, আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে এই মামলায় কোনো পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ আনা হবে না।

আমাদের মতে, অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করার মতো যথেষ্ট প্রমাণ নেই।”

এই সিদ্ধান্তের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার চাইলে তাদের অধিকার প্রয়োগ করে এই সিদ্ধান্তের পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদন করতে পারবে।

দুর্ঘটনার পর এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছিল, যার ফলশ্রুতিতে পুলিশের সঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দাদের সংঘর্ষ হয়। এতে ১৫ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছিলেন।

বিক্ষোভকারীরা নিহত কিশোরদের প্রতি সম্মান জানাতে একত্রিত হয়েছিল বলে জানা যায়।

এদিকে, স্বাধীন পুলিশ আচরণ দপ্তর (Independent Office for Police Conduct – IOPC) জানিয়েছে, তারা পুলিশ ভ্যানের চালকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সিপিএস-এর কাছে প্রমাণ জমা দিয়েছিল।

আইওপিসি’র পরিচালক ডেভিড ফোর্ড বলেন, “আমরা জানি, কিশোরদের মৃত্যু স্থানীয় সম্প্রদায়ের উপর গভীর প্রভাব ফেলেছে। আমরা তাদের ধৈর্য্যের জন্য আবারও ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

আমরা পুলিশ ভ্যানের চালকের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিচ্ছি এবং খুব শীঘ্রই এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।”

আইওপিসি আরও জানায় নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে সাউথ ওয়েলস পুলিশের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলোর তদন্তও প্রায় শেষের পথে। অভিযোগগুলোর মধ্যে ঘটনার স্থানে পরিবারগুলোর প্রতি পুলিশের আচরণও অন্তর্ভুক্ত ছিল।

এ ধরনের ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের গুরুত্ব অপরিহার্য। বাংলাদেশেও অতীতে এ ধরনের ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, যেখানে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়েছিল।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *