মাঠ কাঁপানো বালেবার সাফল্যের রহস্য! বাবার অভিনব পরামর্শে বদলে যায় জীবন!

ব্রাইটন ও হোভ আলবিওনের তরুণ মিডফিল্ডার কার্লোস বালেবা, যিনি ক্যামেরুন থেকে উঠে এসে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে নিজের জায়গা করে নিয়েছেন, বর্তমানে ফুটবল বিশ্বে বেশ পরিচিত এক নাম। ২১ বছর বয়সী এই ফুটবলারের উত্থান যেন রূপকথার মতোই।

বালেবার কঠোর পরিশ্রম, ফুটবল প্রেম এবং পরিবারের প্রতি ভালোবাসাই তাকে আজকের এই অবস্থানে এনে দিয়েছে।

ফুটবল খেলার প্রতি বালেবার আগ্রহ ছোটবেলা থেকেই। ক্যামেরুনের ডুয়ালা শহরে বেড়ে ওঠা বালেবার বাবার হাত ধরেই ফুটবলে হাতেখড়ি হয়। বালেবার বাবা ইউজিন বালেবা নিজেও একসময় পেশাদার ফুটবলার ছিলেন।

তিনিই ছিলেন বালেবার প্রথম কোচ। বাবার কঠোর তত্ত্বাবধানে ১০ বছর বয়স থেকেই বালেবা নিয়মিত অনুশীলন শুরু করেন।

বালেবার কঠোর অনুশীলনের পেছনে তার মায়েরও উৎসাহ ছিল। মা চাইতেন, বালেবা কঠোর পরিশ্রম করুক এবং ভালো একজন ফুটবলার হোক। বালেবা সবসময় তার মায়ের স্বপ্ন পূরণ করতে চেয়েছেন।

বালেবা যখন লিলে-তে খেলতেন, তখন তিনি মায়ের জন্য ডুয়ালা শহরে একটি বাড়ি তৈরি করার প্রতিশ্রুতি দেন। মায়ের মৃত্যুর পর তিনি সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ করেন।

২০২৩ সালের গ্রীষ্মে ব্রাইটন ও হোভ আলবিওনে যোগ দেন বালেবা। এর আগে তিনি ফ্রান্সের ক্লাব লিলে-র হয়ে খেলেছেন। প্রিমিয়ার লিগে খেলাটা বালেবার জন্য সহজ ছিল না।

এখানকার খেলার তীব্রতা এবং গ্যালারির দর্শকদের উন্মাদনা তাকে কিছুটা হলেও হতবাক করে দেয়। তবে তিনি দ্রুতই এই পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেন।

বালেবা জানান, প্রথম দিকে ম্যানচেস্টার সিটির মতো দলের বিপক্ষে খেলতে নামলে তিনি কিছুটা নার্ভাস বোধ করতেন। কিন্তু তিনি হাল ছাড়েননি। কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে নিজেকে প্রস্তুত করেছেন।

বালেবার খেলার ধরনের একটি বিশেষ দিক হলো তার শারীরিক সক্ষমতা। মাঠের খেলায় তিনি বেশ আগ্রাসী এবং বল দখলের ক্ষেত্রে পারদর্শী।

বালেবার বাবা তাকে ছোটবেলায় অ্যাক্রোব্যাটিক্স শেখাতেন, যাতে খেলার সময় তিনি বলের গতিবিধি ভালোভাবে বুঝতে পারেন এবং হেডার দেওয়ার সময় সঠিক সময়ে লাফ দিতে পারেন। বালেবা এখনো গোল করার পর ব্যাকফ্লিপ করেন, যা তার বাবার দেওয়া একটি বিশেষ প্রশিক্ষণ পদ্ধতিরই অংশ।

বর্তমানে বালেবার নজর বিশ্বসেরা মিডফিল্ডার হওয়ার দিকে। বালেবা বলেন, তিনি চান বিশ্বজুড়ে তার পরিচিতি ছড়িয়ে পড়ুক এবং একজন কিংবদন্তি ফুটবলার হিসেবে পরিচিত হতে চান।

বালেবার এই স্বপ্ন পূরণে তার পরিবার সবসময় পাশে আছে। বালেবার ভাষায়, তার মা, বাবা এবং ছোট ভাই-ই তার অনুপ্রেরণা। বালেবার খেলা দেখে এখন অনেক উদীয়মান ফুটবলার অনুপ্রাণিত হয়।

শোনা যায়, লিভারপুল এবং ম্যানচেস্টার সিটির মতো বড় ক্লাবগুলোও নাকি বালেবাকে দলে ভেড়াতে চাইছে। বালেবার এই সাফল্যের পেছনে কঠোর পরিশ্রম, পরিবারের সমর্থন এবং দেশের প্রতি ভালোবাসাই মূল চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করেছে।

তথ্যসূত্র: The Guardian

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *