ভয়ঙ্কর এক আবিষ্কার! হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জে পাওয়া গেল এক বিরল প্রজাতির মাংসাশী শুঁয়োপোকা, যা শিকারের কঙ্কাল দিয়ে তৈরি করে তার আবাস। বিজ্ঞানীরা এই পোকার নাম দিয়েছেন ‘হাড় সংগ্রাহক’ (Bone Collector)।
ওাহু দ্বীপের গভীর অরণ্যে এদের বসবাস। মাকড়সার জালে আটকে পড়া পোকামাকড় এদের প্রধান খাদ্য। পোকামাকড় শিকার করার পর, এই শুঁয়োপোকাগুলো তাদের দেহের অংশবিশেষ, যেমন—মাথার খুলি, ডানা ইত্যাদি, নিজেদের তৈরি করা রেশমের আবরণে জুড়ে দেয়। অনেকটা যেন শিকারের কঙ্কালের একটি আচ্ছাদন!
ইউনিভার্সিটি অফ হাওয়াই-এর অধ্যাপক ড্যান রুবিনফ এই বিষয়ে গবেষণা করেছেন। তিনি জানান, “অন্যান্য মাংসাশী শুঁয়োপোকাদেরও নানা কার্যকলাপ রয়েছে, তবে এই পোকাটি সত্যিই অসাধারণ।”
বিজ্ঞানীদের ধারণা, এই কঙ্কালের আবরণ সম্ভবত আত্মরক্ষার কাজে লাগে। শিকারী পাখি বা অন্যান্য প্রাণী থেকে বাঁচতে এই আচ্ছাদন তাদের সাহায্য করে।
সাধারণত, হাওয়াই দ্বীপে পাওয়া যাওয়া শুঁয়োপোকাদের মধ্যে অনেকেই নিজেদের বাসস্থান তৈরিতে লাইকেন, বালি বা অন্যান্য উপাদান ব্যবহার করে। কিন্তু হাড় সংগ্রাহক পোকাটি এক্ষেত্রে সম্পূর্ণ ভিন্ন। এরা পোকামাকড়ের অংশ ব্যবহার করে, যা তাদের বৈশিষ্ট্যকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে।
স্থানীয় কীটতত্ত্ব বিশেষজ্ঞ স্টিভেন মন্টগোমারি, যিনি এই গবেষণার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না, তিনি এই আবিষ্কারকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন। তিনি বলেন, “এই ধরনের আবাস সত্যিই খুব আশ্চর্যজনক।”
গবেষণা অনুযায়ী, এই বিরল প্রজাতির শুঁয়োপোকা অন্তত ৬০ লক্ষ বছর আগে থেকে এই অঞ্চলে বসবাস করছে। বর্তমানে তারা বহিরাগত প্রজাতির সঙ্গে একই পরিবেশে বাস করছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এদের সংরক্ষণে আরও বেশি মনোযোগ দেওয়া দরকার। কারণ, এদের অস্তিত্ব বর্তমানে হুমকির সম্মুখীন।
যুক্তরাষ্ট্রের ‘সায়েন্স’ জার্নালে এই গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, তাঁরা গত ২০ বছরে মাত্র ৬২টি হাড় সংগ্রাহক শুঁয়োপোকার সন্ধান পেয়েছেন।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস