ড cডি-র বিরুদ্ধে সাক্ষ্যে বিস্ফোরক অভিযোগ, কান্নায় ভাঙলেন ক্যাসি

বিখ্যাত র‍্যাপার ও সঙ্গীত প্রযোজক শন ‘ডিডি’ কম্বসের বিরুদ্ধে চলমান র‍্যাকেটিয়ারিং ও মানব পাচার মামলার শুনানিতে প্রাক্তন প্রেমিকা ক্যাসি ভেন্টুরার সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। আদালতে ভেন্টুরা ডিডির বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে শারীরিক নির্যাতন, মানসিক নিপীড়ন এবং যৌন নির্যাতনের গুরুতর অভিযোগ এনেছেন।

খবর অনুযায়ী, মামলার শুনানিতে ভেন্টুরা জানান, ডিডি তাকে নানাভাবে নিয়ন্ত্রণ করতেন এবং কিছু যৌনকর্মে অংশ নিতে বাধ্য করতেন।

মঙ্গলবার আদালতে প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা ধরে চলে ভেন্টুরার জবানবন্দি। ধারণা করা হচ্ছে, এই সাক্ষ্য গ্রহণ কয়েক দিন ধরে চলতে পারে।

মামলার শুনানিতে ভেন্টুরা এবং ডিডির সম্পর্কের শুরু থেকে বিচ্ছেদের বিস্তারিত তুলে ধরেন। তিনি জানান, প্রায় দুই দশক আগে তাদের সম্পর্ক শুরু হয়েছিল। শুরুতে তাদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল, কিন্তু ধীরে ধীরে ডিডি তার ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে শুরু করেন।

ভেন্টুরা জানান, ডিডি তার পোশাক থেকে শুরু করে কার সাথে কথা বলবেন, সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করতেন। এমনকি তার মেজাজ খারাপ থাকলে শারীরিক নির্যাতন করতেন। তিনি বলেন, সামান্য ভুল করলে বা তার কথা অপছন্দ হলে ডিডি তাকে মারধর করতেন।

ভেন্টুরা আরও জানান, ডিডির নির্দেশে তার ব্যক্তিগত জিনিসপত্রও সরিয়ে নেওয়া হতো।

আদালতে ভেন্টুরা ‘ফ্রিক অফস’ নামে পরিচিত কিছু ঘটনার বর্ণনা দেন। যেখানে ডিডি অন্য পুরুষদের সঙ্গে তার যৌন সম্পর্ক দেখতে পছন্দ করতেন এবং নিজেও সেই সময় যৌনকর্মে লিপ্ত হতেন।

ভেন্টুরার দাবি, এই ধরনের ঘটনা প্রায় নিয়মিত ঘটত এবং তিনি এতে অংশ নিতে বাধ্য হতেন। একপর্যায়ে তিনি এর থেকে মুক্তি পেতে চাইলেও ডিডি তাকে পাত্তা দেননি।

ভেন্টুরা আরও জানান, ‘ফ্রিক অফস’-এর সময় তিনি নিজেকে শান্ত রাখতে মাদক নিতেন। এর ফলে তার শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক প্রভাব পড়েছিল।

তিনি বলেন, এই ঘটনাগুলো তার কাছে “কাজের” মতো হয়ে গিয়েছিল, যেখানে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার কোনো সুযোগ ছিল না।

আদালতে ভেন্টুরা জানান, ২০১৬ সালে লস অ্যাঞ্জেলের একটি হোটেলে ডিডি তাকে মারধর করেছিলেন। সেই ঘটনার একটি ভিডিও ইতোমধ্যে প্রকাশ হয়েছে, যা মামলার গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

ভেন্টুরা আরও জানান, ডিডির নির্দেশে তার কর্মীরা প্রায়ই এই ধরনের ঘটনার জন্য হোটেল বুক করতেন এবং অন্যান্য ব্যবস্থা করতেন।

ভেন্টুরার সাক্ষ্যে উঠে আসে, ডিডি তার অন্যান্য বান্ধবীদের নিয়ে ঈর্ষা করতেন এবং তাদের সঙ্গে তার কেমন সম্পর্ক ছিল সে বিষয়েও কথা বলেন। তিনি বলেন, ডিডি তাকে প্রায়ই বলতেন তাদের মধ্যে একচেটিয়া সম্পর্ক রয়েছে, কিন্তু বাস্তবে তা ছিল না।

অন্যদিকে, ডিডির আইনজীবীরা বলছেন, ভেন্টুরার অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন এবং তাদের মধ্যেকার সম্পর্ক ছিল পারস্পরিক সম্মতির ভিত্তিতে। তারা এও দাবি করেন, ডিডির বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ মিথ্যা।

এই মামলার রায় ডিডির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দোষী সাব্যস্ত হলে, তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ভোগ করতে হতে পারে। বর্তমানে এই মামলার কার্যক্রম চলছে এবং উভয় পক্ষের বক্তব্য শোনার পর আদালত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *