আশ্চর্য রায়! অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন সেমেনিয়ার লড়াইয়ে জয়?

শিরোনাম: মানবাধিকার আদালতে কাস্টার সেমেনিয়ার মামলা: সুইজারল্যান্ডের শুনানিতে ত্রুটি, তবে নিয়ম বহাল রাখল আদালত

খেলাধুলায় লিঙ্গ নির্ধারণের নিয়ম নিয়ে দুই বারের অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন দৌড়বিদ কাস্টার সেমেনিয়ার লড়াইয়ে নতুন মোড়। ইউরোপীয় মানবাধিকার আদালত সম্প্রতি এক রায়ে জানিয়েছে, সুইজারল্যান্ডের সুপ্রিম কোর্টে এই মামলার শুনানিতে সেমেনিয়াকে যথাযথভাবে বিবেচনা করা হয়নি।

তবে, আদালতের এই রায়ে বিশ্ব অ্যাথলেটিক্সের (World Athletics) নিয়ম বহাল থাকছে, যা সেমেনিয়ার মতো অ্যাথলেটদের নারী ইভেন্টে অংশগ্রহণে বাধা দেয়।

দক্ষিণ আফ্রিকার এই দৌড়বিদের শরীরে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি টেস্টোস্টেরন (Testosterone) থাকার কারণে বিতর্ক সৃষ্টি হয়। বিশ্ব অ্যাথলেটিক্সের নিয়ম অনুযায়ী, এই ধরনের অ্যাথলেটদের নারী ইভেন্টে অংশগ্রহণের জন্য শরীরে টেস্টোস্টেরনের মাত্রা কমাতে হয়।

সেমেনিয়া এই নিয়মের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে আইনি লড়াই চালাচ্ছেন। তার যুক্তি ছিল, শরীরে টেস্টোস্টেরনের উচ্চ মাত্রা তার একটি স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য, যা তাকে খেলাধুলায় বাড়তি সুবিধা দেয় না।

আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, সুইজারল্যান্ডের ফেডারেল সুপ্রিম কোর্ট সেমেনিয়ার আপিলের শুনানিতে যথাযথ বিচারিক পর্যালোচনা করেনি। সেমেনিয়ার আইনজীবীরা জানিয়েছেন, এই রায়ের ফলে সুইজারল্যান্ডের আদালতকে এখন পুনরায় এই মামলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

তবে, ইউরোপীয় মানবাধিকার আদালত বিশ্ব অ্যাথলেটিক্সের নিয়মকে সরাসরি খারিজ করেনি।

কাস্টার সেমেনিয়ার এই মামলার শুরুটা হয় ২০১৯ সালে, যখন কোর্ট অফ আর্বিট্রেশন ফর স্পোর্ট (Court of Arbitration for Sport – CAS) বিশ্ব অ্যাথলেটিক্সের নিয়মকে সমর্থন করে রায় দেয়। সেই রায়ের বিরুদ্ধে সেমেনিয়া আপিল করলে ইউরোপীয় মানবাধিকার আদালত সম্প্রতি এই রায় দেয়।

আদালতের এই সিদ্ধান্তের ফলে খেলাধুলায় লিঙ্গ নির্ধারণের নিয়ম নিয়ে বিতর্ক আরও বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। বিশেষ করে, অন্যান্য খেলাধুলার সংস্থাগুলো তাদের নিজস্ব নিয়ম পর্যালোচনা করতে পারে। সেমেনিয়ার আইনজীবী জানিয়েছেন, তারা এই রায়ের পরবর্তী পদক্ষেপগুলো বিবেচনা করছেন।

আদালত কাস্টার সেমেনিয়াকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৮০ হাজার ইউরো প্রদানের নির্দেশ দিয়েছে। বাংলাদেশি টাকায় এর পরিমাণ প্রায় ৯৬ লক্ষ টাকার সমান।

কাস্টার সেমেনিয়া দীর্ঘদিন ধরে এই নিয়মের বিরুদ্ধে লড়াই করছেন এবং তিনি তার অধিকারের জন্য অবিচল রয়েছেন। তার এই লড়াই শুধু তার নিজের জন্য নয়, বরং খেলাধুলায় সবার জন্য ন্যায্য পরিবেশ তৈরির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

তথ্য সূত্র:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *