১১ ঘণ্টার সিনেমায় শল্য চিকিৎসা থেকে চরম যৌনতা! ঝড় তুলল বিতর্কিত সিনেমা

কানাডার চলচ্চিত্র নির্মাতা লুইস উইয়ার্ডের সাড়া জাগানো সিনেমা ‘ক্যাস্ট্রেশন মুভি’ মুক্তি পেতে চলেছে, যা রূপান্তরকামীদের জীবন ও সমাজের প্রান্তিক মানুষদের প্রতিচ্ছবি ফুটিয়ে তোলে। সিনেমাটি ইতোমধ্যে দর্শক ও সমালোচকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে, বিশেষ করে রূপান্তরকামী সম্প্রদায়ের মধ্যে।

এই সিনেমাটি শুধু একটি চলচ্চিত্র নয়, বরং পরিচয়, যৌনতা এবং সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের জীবন নিয়ে এক গভীর অনুসন্ধান।

লুইস উইয়ার্ড, যিনি এই সিনেমার পরিচালক, তাঁর কাজের মাধ্যমে পরিচিতি লাভ করেছেন। শুরুতে, তিনি এই সিনেমাটিকে ৯০ মিনিটের একটি ছোট চলচ্চিত্র হিসেবে তৈরি করতে চেয়েছিলেন।

কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এর বিষয়বস্তু এবং গভীরতা বাড়তে থাকে। বর্তমানে, ‘ক্যাস্ট্রেশন মুভি’র প্রথম অংশ প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টার, এবং নির্মাতারা ধারণা করছেন, পুরো সিনেমাটি মুক্তি পেলে তা ১২ ঘণ্টার বেশি সময় নেবে।

সিনেমাটির মূল বিষয়বস্তু হলো, রূপান্তরকামী মানুষের জীবনযাত্রা, তাঁদের সংগ্রাম এবং সমাজের চোখে তাঁদের অবস্থান। সিনেমায় রূপান্তরকামী নারী-পুরুষদের দৈনন্দিন জীবন, সম্পর্ক, এবং সমাজের বিভিন্ন প্রতিকূলতার চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।

গল্পের গভীরতা এবং চরিত্রের জটিলতা দর্শকদের আকর্ষণ করেছে। সিনেমার গল্পে একজন ‘ইনসেল’-এর (Incel) জীবনযাত্রা দেখানো হয়েছে, যেখানে সে সমাজের মূল স্রোত থেকে দূরে সরে যায়।

এরপর সিনেমার প্রধান চরিত্র মিশেলা “ট্রাপস” সিনক্লেয়ারের গল্প তুলে ধরা হয়েছে, যিনি একজন রূপান্তরকামী যৌনকর্মী।

সিনেমাটি নির্মাণ করা হয়েছে খুবই সাধারণ একটি Hi8 ক্যামেরা ব্যবহার করে। এর ফলে সিনেমার দৃশ্যগুলোতে একটি বিশেষ ধরনের বাস্তবতার ছোঁয়া পাওয়া যায়, যা দর্শকদের আরও বেশি আকৃষ্ট করে।

এই সিনেমায় নগ্নতা, অস্ত্রোপচার এবং আত্ম-ক্ষতির মতো কিছু দৃশ্য রয়েছে, যা দর্শকদের জন্য উদ্বেগের কারণ হতে পারে। তবে নির্মাতারা মনে করেন, এই ধরনের দৃশ্যগুলো সমাজের কঠিন বাস্তবতা তুলে ধরার একটি অংশ।

সিনেমাটি নির্মাণের পেছনে অর্থ সংগ্রহের জন্য লিলি ওয়াচাওয়াস্কির মতো পরিচিত ব্যক্তিত্ব সাহায্য করেছেন। সিনেমাটি মুক্তির পর বিভিন্ন দেশে, বিশেষ করে রূপান্তরকামী সম্প্রদায়ের মধ্যে দারুণ সাড়া ফেলেছে।

এই সিনেমাটি শুধু একটি বিনোদন মাধ্যম নয়, বরং এটি বিভিন্ন প্রান্তিক মানুষের প্রতি সহানুভূতি তৈরি করতে সাহায্য করে। লুইস উইয়ার্ড মনে করেন, সিনেমাটি সমাজের চোখে অবহেলিত কিছু মানুষের প্রতিচ্ছবি, যারা আমাদের মতোই মানুষ।

‘ক্যাস্ট্রেশন মুভি’ বর্তমানে বিভিন্ন চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হচ্ছে এবং অনলাইনেও দেখার সুযোগ রয়েছে। নির্মাতারা আশা করেন, এই সিনেমাটি দর্শকদের মধ্যে আলোচনা তৈরি করবে এবং সমাজের বিভিন্ন বিষয়ে নতুন করে ভাবতে উৎসাহিত করবে।

তথ্যসূত্র: The Guardian

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *