চীনের একটি শীর্ষস্থানীয় কোম্পানি, কন্টেম্পোরারি এম্পেরেক্স টেকনোলজি (সিএটিএল), সম্প্রতি তাদের নতুন ব্যাটারি প্রযুক্তি “শেনজিং”-এর ঘোষণা করেছে। এই ব্যাটারিটি বৈদ্যুতিক গাড়ির (ইভি) জগতে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে চলেছে।
প্রস্তুতকারকদের দাবি অনুযায়ী, মাত্র পাঁচ মিনিটে চার্জ করে শেনজিং ব্যাটারি দিয়ে প্রায় ৫১৫ কিলোমিটার (৩২০ মাইল) পথ পাড়ি দেওয়া যাবে।
চীনের বাজারে ইলেক্ট্রিক গাড়ির চাহিদা দ্রুত বাড়ছে। এই বাজারে টিকে থাকতে ব্যাটারি প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলোর মধ্যে চলছে তীব্র প্রতিযোগিতা।
সিএটিএল-এর নতুন এই ঘোষণা তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী বিওয়াইডি-কে আরও এক ধাপ পিছনে ফেলেছে। বিওয়াইডি-র উন্নত প্রযুক্তির ব্যাটারি যেখানে প্রায় ৪০০ কিলোমিটার (২৫০ মাইল) পর্যন্ত রেঞ্জ দিতে পারে, সেখানে সিএটিএল-এর “শেনজিং” ব্যাটারি এক চার্জে প্রায় ৫১৫ কিলোমিটার পর্যন্ত চলতে সক্ষম।
বৈদ্যুতিক গাড়ির বাজারে বর্তমানে টে্সলার চার্জিং প্রযুক্তি বেশ পরিচিত। তবে, সিএটিএল-এর নতুন প্রযুক্তির সাথে তুলনা করলে, টে্সলার সুপারচার্জার ১৫ মিনিটে প্রায় ৩২২ কিলোমিটার পর্যন্ত রেঞ্জ সরবরাহ করে।
সিএটিএল-এর চিফ টেকনোলজি অফিসার, গাও হুয়ান, সাংহাইয়ে অনুষ্ঠিত এক অনুষ্ঠানে এই ব্যাটারির ঘোষণা করেন। তিনি জানান, “আমরা আবারও পারফরম্যান্সের সীমা অতিক্রম করছি।”
শুধু তাই নয়, সিএটিএল তাদের নতুন সোডিয়াম-আয়ন ব্যাটারি “নাক্সট্রা”-ও উন্মোচন করেছে। প্রস্তুতকারকদের মতে, এই ব্যাটারি লিথিয়াম এবং অ্যাসিড-ভিত্তিক ব্যাটারির চেয়ে বেশি সাশ্রয়ী এবং নিরাপদ।
নাক্সট্রা ব্যাটারি এক চার্জে প্রায় ৪৯৯ কিলোমিটার (৩১০ মাইল) পর্যন্ত চলতে পারবে। বাজারে এর ব্যাপক চাহিদা তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বর্তমানে বিশ্বের বৃহত্তম ইভি ব্যাটারি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান হলো সিএটিএল। বাজার গবেষণা সংস্থা এসএনই রিসার্চের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে বিশ্ববাজারে তাদের শেয়ার ছিল প্রায় ৩৮ শতাংশ।
তাদের পরেই রয়েছে বিওয়াইডি, যাদের শেয়ার ছিল ১৭.২ শতাংশ। সিএটিএল-এর এই সাফল্যের পেছনে অন্যতম কারণ হলো তারা টে্সলা, বিএমডব্লিউ, ফক্সওয়াগন এবং ফোর্ডের মতো বড় গাড়ি প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলোকে ব্যাটারি সরবরাহ করে থাকে।
সিএটিএল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নতুন “শেনজিং” ব্যাটারি চলতি বছরে প্রায় ৬৭টির বেশি ইভি মডেলে ব্যবহার করা হবে। এছাড়াও, প্রতিকূল আবহাওয়ায়, এমনকি মাইনাস ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাতেও এই ব্যাটারি ভালো পারফর্ম করতে সক্ষম।
যদিও বাংলাদেশে বৈদ্যুতিক গাড়ির বাজার এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে, তবে ব্যাটারি প্রযুক্তির এই অগ্রগতি ভবিষ্যতে আমাদের দেশেও ইভি’র ব্যবহার বাড়াতে সহায়ক হবে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন