একুশ শতকের সঙ্গীত জগতে, চাকা খান এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। তাঁর কন্ঠের জাদুতে মুগ্ধ হয়েছে বিশ্ব, জয় করেছেন সঙ্গীতপ্রেমীদের হৃদয়।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে এই কিংবদন্তী শিল্পী তাঁর সঙ্গীত জীবন, অনুপ্রেরণা, এবং ভবিষ্যতের পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলেছেন।
ছোটবেলায় শিকাগোর ‘বার্নিং স্পিয়ার’-এ একটি ট্যালেন্ট শো-তে গান গেয়েছিলেন চাকা খান। সেই সময়েই তিনি বুঝতে পারেন সঙ্গীতের প্রতি তাঁর গভীর আকর্ষণ।
এর আগে তিনি শিক্ষক অথবা অন্য কিছু হওয়ার কথা ভাবতেন, কিন্তু সেই রাতে আরিতা ফ্রাঙ্কলিনের গান গেয়ে শ্রোতাদের ভালোবাসা পাওয়ার পর, যেন নতুন এক দিগন্ত উন্মোচিত হয় তাঁর সামনে।
চাকা খানের আত্মবিশ্বাস সবসময়ই ছিল চোখে পড়ার মতো। রুফাস ব্যান্ডের সঙ্গে কাজ করার সময়, তিনি জানতেন যে তাঁরা সফল হবেন।
আজও, নিজের কাজ নিয়ে তিনি একই রকম আত্মবিশ্বাসী। তাঁর মতে, সাফল্যের জন্য নিজের প্রতি ভালোবাসা ও বিশ্বাস অপরিহার্য।
জনি মিচেলের গান, বিশেষ করে ‘হেইজিরা’ (Hejira), চাকা খানের খুব প্রিয়। জনি তাঁর ভালো বন্ধু এবং তাঁর সঙ্গেই একটি অ্যালবাম করার পরিকল্পনা করছেন তিনি।
সঙ্গীতের বাইরে, মঞ্চেও তাঁর উপস্থিতি ছিল প্রশংসনীয়। ‘মামা, আই ওয়ান্ট টু সিং!’(Mama, I Want To Sing!) নাটকে তাঁর অভিনয় আজও অনেকের মনে আছে।
তবে মঞ্চে অভিনয়ের চেয়ে গান গাওয়াই তাঁর বেশি পছন্দের। গান তাঁকে আনন্দ দেয়, বাঁচতে শেখায়।
ড্রামস বাজানোও চাকা খানের খুব প্রিয়। ছোটবেলায় বাবার সাথে তিনি পার্কের ড্রাম সার্কেলে যোগ দিতেন।
তিনি জানান, খুব শীঘ্রই তাঁর নতুন কিছু গানের রেকর্ডিং শুরু হতে চলেছে, যেখানে তিনি ড্রামস বাজাবেন।
এছাড়াও, জনপ্রিয় শিল্পী সিয়ার (Sia) সঙ্গে তাঁর একটি অসাধারণ কাজ চলছে, যা সম্ভবত গ্রীষ্মকালে মুক্তি পাবে।
কবিতা লেখার প্রতিও তাঁর ঝোঁক রয়েছে। তিনি জানান, তাঁর অনেক কবিতা লেখার খাতা খুঁজে পাওয়া যায় না।
তবে, তিনি তাঁর লেখাগুলো একত্র করে একটি কবিতার বই প্রকাশের কথা ভাবছেন। জীবনকে তিনি সবসময় অনুপ্রেরণা হিসেবে দেখেন।
চাকা খানের মতে, সঙ্গীত একটি সর্বজনীন ভাষা। সঙ্গীতের মাধ্যমে তিনি এক ঐশ্বরিক অনুভূতি অনুভব করেন, যা মানুষকে একসূত্রে বাঁধে।
তিনি মনে করেন, সঙ্গীতের এই ঐক্যের অনুভূতিই আমাদের অনেক বেশি মানবিক করে তোলে।
প্রিন্স, মাইলস ডেভিসের মতো কিংবদন্তী শিল্পীদের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতাও তিনি শেয়ার করেছেন।
প্রিন্সের সঙ্গে কাজ করাটা ছিল তাঁর নিজের মতোই, এমনটাই মনে করেন তিনি। তাঁদের একসঙ্গে করা গানগুলো নিয়ে শীঘ্রই একটি অ্যালবাম প্রকাশ করার পরিকল্পনা আছে।
এছাড়াও, তিনি এলজিবিটিকিউ+ (LGBTQ+) সম্প্রদায়ের প্রতি তাঁর সমর্থনের কথা জানিয়েছেন। তিনি মনে করেন, প্রত্যেক মানুষেরই নিজের জীবন ও ভালোবাসাকে প্রকাশ করার স্বাধীনতা আছে।
বর্তমানে, চাকা খান আসন্ন ‘হ্যাম্পটন কোর্ট প্যালেস’ উৎসবে গান পরিবেশন করবেন। তাঁর নতুন ‘মেনিফেস্টেশন প্ল্যানার অ্যান্ড জার্নাল’ও প্রকাশিত হয়েছে।
সঙ্গীত এবং জীবনের এই বর্ণময় পথচলায়, চাকা খান আজও কোটি মানুষের কাছে এক অনুপ্রেরণার নাম।
তথ্য সূত্র: The Guardian