ঐক্য! ট্রাম্প ও মাস্ককে এক করতে পারলেন চার্লি

যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং বিশ্বের শীর্ষ ধনী ইলন মাস্কের মধ্যে সম্প্রতি সম্পর্ক জোড়া লেগেছে।

জানা গেছে, এই দুই প্রভাবশালী ব্যক্তির মধ্যে পুনরায় সম্পর্ক স্থাপনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন বিশিষ্ট মার্কিন রক্ষণশীল রাজনৈতিক কর্মী চার্লি কার্ক।

যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যম সূত্রে খবর, ট্রাম্প ও মাস্কের মধ্যে যখন মতবিরোধ চরম আকার ধারণ করে, তখন চার্লি কার্ক দু’জনের মধ্যেকার বিভেদ মিটিয়ে ফেলার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন।

তিনি মনে করতেন, তাঁদের ঐক্যবদ্ধ থাকাটা রক্ষণশীল রাজনৈতিক আদর্শের জন্য জরুরি। এই লক্ষ্যে তিনি চেষ্টা চালিয়ে যান।

গত জুনে এক সাক্ষাৎকারে কার্ক জানিয়েছিলেন, তিনি দু’জনকেই চেনেন এবং তাঁদের মধ্যে সম্পর্ক পুনঃস্থাপিত হবে বলে তিনি আশাবাদী।

শেষ পর্যন্ত, কার্কের প্রচেষ্টায় ট্রাম্প ও মাস্ককে এক সাথে দেখা যায়। সম্প্রতি, ফিনিক্সে অনুষ্ঠিত কার্কের স্মরণসভায় মাস্ক এবং ট্রাম্পকে পাশাপাশি বসে কথা বলতে দেখা যায়।

তাঁদের মধ্যে হাত মেলানো ও কুশল বিনিময়ের ছবিও প্রকাশিত হয়েছে।

কার্ক, যিনি এই দুই প্রভাবশালী ব্যক্তির সঙ্গেই ঘনিষ্ঠ ছিলেন, তাঁর একটি পডকাস্টে বিষয়টি উল্লেখ করেন। যদিও মাস্কের সঙ্গে বিরোধের সময় কার্ক সব সময়ই ট্রাম্পের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেছেন, তবুও তিনি মাস্কের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিলেন।

তিনি একসময় মাস্কের ‘টুইটার’ কেনার পদক্ষেপকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবেও উল্লেখ করেছিলেন।

কার্কের ধারণা ছিল, তাঁদের মধ্যে একটা ‘শান্তিপূর্ণ বোঝাপড়া’ হবে।

তাঁর মতে, বামপন্থীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ঐক্যবদ্ধ থাকাটা জরুরি।

কার্কের পডকাস্টের নির্বাহী প্রযোজক অ্যান্ড্রু কোলভেট স্মরণসভার একটি ছবি পোস্ট করে লেখেন, “চার্লি খুব করে চেয়েছিলেন এই দুই মানুষ আবার কাছাকাছি আসুক।

আশা করি, তাঁরা একে অপরের সঙ্গে বলছেন, ‘চার্লির জন্য’।”

এর কিছুক্ষণ পরেই মাস্ক তাঁর ও ট্রাম্পের একটি ছবি পোস্ট করেন, যেখানে লেখা ছিল, “চার্লির জন্য”।

পরে হোয়াইট হাউসের অফিশিয়াল একাউন্ট থেকেও একই ছবি পোস্ট করা হয়।

মাস্ক যদিও একসময় নিজস্ব রাজনৈতিক দল গঠনের ঘোষণা দিয়েছিলেন, কার্ক আশা করেছিলেন যে তিনি ট্রাম্পের সঙ্গেই থাকবেন।

জুলাই মাসে তাঁর পডকাস্টে কার্ক বলেন, “আমি মনে করি, ইলন ও ট্রাম্পের মধ্যে আবার সম্পর্ক ভালো হবে।

আমি চাই না, ইলন ‘আমেরিকা পার্টি’ তৈরি করে এই বিষয়টিকে নিয়ন্ত্রণের বাইরে নিয়ে যাক। এটা একটা খারাপ ধারণা।”

জানা যায়, মাস্ক ও ট্রাম্পের মধ্যেকার সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে কার্ক অনেকটা মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করেছেন।

তিনি নিয়মিতভাবে মাস্কের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন এবং ট্রাম্পের নীতি-সংক্রান্ত বিষয়ে তাঁর মতামত নিতেন।

একটি সূত্র মারফত জানা যায়, মাস্ক কার্কের পরামর্শ গ্রহণ করতেন।

যদিও মাস্ক একটি নতুন দল গঠনের ঘোষণা দিয়েছিলেন, কিন্তু দলটির আনুষ্ঠানিক কোনো কার্যক্রম এখনো দেখা যায়নি।

এছাড়াও, মাস্ক সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ট্রাম্পের প্রতি ইতিবাচক মন্তব্য করেছেন।

চার্লির স্মরণসভার পর মাস্কের ‘আমেরিকা পার্টি’র একটি অ্যাকাউন্টে এরিকা কার্কের সঙ্গে মাস্কের ছবি পোস্ট করা হয়।

এরিকা তাঁর স্বামীর প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর পরে মাস্ক বাইবেলের একটি উক্তি করেন, “আমাদের অপরাধ যেমন আমরা ক্ষমা করি, তেমনই তুমিও আমাদের অপরাধ ক্ষমা করো।”

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতি বিশ্বজুড়ে প্রভাব ফেলে।

ট্রাম্প ও মাস্কের মধ্যেকার এই পুনর্মিলন তাই অনেকের কাছেই আগ্রহের বিষয়।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এর ফলে ভবিষ্যতে বিভিন্ন রাজনৈতিক সমীকরণে পরিবর্তন আসতে পারে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *