ডালাস কাউবয়স-এর নেপথ্যে এক নারী: শার্লট জোন্স-এর উত্থান।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পেশাদার ফুটবল লিগ-এর অন্যতম প্রভাবশালী দল ডালাস কাউবয়স। আর এই দলের সাফল্যের পেছনে রয়েছে একটি প্রভাবশালী পরিবারের অবদান।
দলের মালিক জেরি জোন্সের কন্যা শার্লট জোন্স, যিনি বর্তমানে দলটির গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন।
খেলাধুলার জগৎ থেকে শুরু করে পারিবারিক ব্যবসা – সব ক্ষেত্রেই তিনি রেখেছেন নিজের যোগ্যতার ছাপ।
আসুন, ডালাস কাউবয়স-এর এই প্রভাবশালী নারীর জীবন ও কর্ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানি।
শার্লট জোন্সের জন্ম ১৯৬৬ সালে, মিসৌরিতে।
তার বাবা জেরি জোন্স, যিনি ডালাস কাউবয়স দলের মালিক।
শৈশবকালে তিনি তার পরিবারের সঙ্গে আরকানসাসে বসবাস করতেন।
এরপর ১৯৮৯ সালে বাবার ডালাস কাউবয়স দলটি কিনে নেওয়ার পরেই যেন তার জীবনের মোড় ঘুরে যায়।
বাবার হাত ধরে তিনিও যুক্ত হন এই দলের সঙ্গে।
শুরুতে খেলাধুলার জগতে তার অভিজ্ঞতা কম থাকলেও বাবার উৎসাহ ও সমর্থনে তিনি দ্রুতই দলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বগুলো নিজের কাঁধে তুলে নেন।
শার্লট এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, “বাবা সবসময় আমার সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা ছিলেন। তিনি আমাকে সবসময় সমর্থন করেছেন এবং আমার উপর অগাধ বিশ্বাস রেখেছিলেন।”
বর্তমানে শার্লট শুধু দলের সহ-মালিকই নন, তিনি দলের নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং প্রধান ব্র্যান্ড অফিসার হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন।
দলের বিপণন এবং বিনোদনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোও তিনি দেখাশোনা করেন।
তার হাত ধরেই ডালাস কাউবয়স-এর ব্র্যান্ড ভ্যালু বেড়েছে কয়েকগুণ।
পারিবারিক ব্যবসার প্রতি শার্লটের রয়েছে বিশেষ আকর্ষণ।
তিনি মনে করেন, এই ব্যবসার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো পরিবার।
তার ভাষায়, “পরিবারই সবকিছু।”
শার্লটের দুই ভাই, স্টিফেন জোন্স এবং জেরি জোন্স জুনিয়র-ও এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত।
স্টিফেন দলের প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা এবং জেরি জুনিয়র প্রধান বিক্রয় ও বিপণন কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
শিক্ষাজীবনে শার্লট ক্যালিফোর্নিয়ার স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হিউম্যান বায়োলজি এবং সাংগঠনিক ব্যবস্থাপনায় স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।
একসময় তিনি রাজনীতিতে কাজ করতে আগ্রহী ছিলেন।
স্নাতক শেষ করে তিনি ওয়াশিংটন ডিসিতে রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান টমি রবিনসনের সঙ্গে কাজ করা শুরু করেন।
তবে পরবর্তীতে বাবার অনুরোধে তিনি ডালাস কাউবয়সে যোগ দেন এবং দলের উন্নতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
ডালাস কাউবয়স-এর হয়ে শার্লটের অন্যতম উল্লেখযোগ্য অবদান হলো ১৯৯৬ সালে থ্যাঙ্কসগিভিং ডে-তে অনুষ্ঠিতব্য হাফটাইম শো-এর পরিকল্পনা করা।
এই শো এখন এনএফএল-এর একটি ঐতিহ্য।
শুধু বিনোদনই নয়, এর মাধ্যমে সমাজসেবামূলক কাজও করা হয়।
তিনি স্যালভেশন আর্মির সঙ্গে যুক্ত হয়ে এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তহবিল সংগ্রহ করেন, যা বিভিন্ন জনহিতকর কাজে ব্যয় করা হয়।
এই পর্যন্ত এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ২ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি অর্থ সংগ্রহ করা হয়েছে।
ব্যক্তিগত জীবনে শার্লট ১৯৯১ সালে ডেভিড “শাই” অ্যান্ডারসনকে বিয়ে করেন।
তাদের তিনটি সন্তান রয়েছে: হ্যালি, শাই জুনিয়র এবং প্যাক্সটন।
বর্তমানে, তার নাতি-নাতনিও রয়েছে।
জানা যায়, তার সন্তানরাও পারিবারিক ব্যবসায় যুক্ত হয়েছেন।
হ্যালি ডালাস কাউবয়স চিয়ারলিডার্স-এর বিশেষ প্রকল্প ব্যবস্থাপক এবং শাই জুনিয়র দলটির একজন স্কাউট হিসেবে কাজ করছেন।
শার্লট জোন্সের জীবন, পারিবারিক ব্যবসা এবং খেলাধুলার প্রতি তার নিবেদন অনেকের কাছেই অনুপ্রেরণা।
তিনি প্রমাণ করেছেন, কঠোর পরিশ্রম, একাগ্রতা এবং পরিবারের প্রতি ভালোবাসাই সাফল্যের চাবিকাঠি।
তথ্য সূত্র: People