অবশেষে কি ভাঙছে স্বপ্ন? চেলসির স্টেডিয়াম নিয়ে বড় দুঃসংবাদ!

চেলসি ফুটবল ক্লাব তাদের স্টেডিয়াম নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়ে বেশ জটিলতার মধ্যে পড়েছে। লন্ডনের ক্লাবটি তাদের বর্তমান মাঠ, স্ট্যামফোর্ড ব্রিজের ধারণক্ষমতা বাড়াতে চাইছে, কিন্তু সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে নতুন মাঠ তৈরির জন্য তারা আলোচনা চালাচ্ছে। তবে সবকিছু ঠিকঠাক চললে, নতুন স্টেডিয়াম তৈরির জন্য তাদের দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।

ওয়েস্ট লন্ডনের আর্লস কোর্ট এলাকার একটি জায়গা নিয়ে চেলসির আগ্রহ রয়েছে। এখানে নতুন স্টেডিয়াম বানানোর সম্ভাবনা দেখা দিলেও, কাজটি সহজ হবে না বলেই মনে করা হচ্ছে।

আর্লস কোর্ট ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি (ECDC) নামে একটি সংস্থা এই জায়গায় অন্য একটি প্রকল্পের প্রস্তাব দিয়েছে, যেখানে স্টেডিয়ামের বদলে মিশ্র-ব্যবহারের একটি উন্নয়ন পরিকল্পনা রয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে চেলসিকে তাদের আগ্রহ প্রমাণ করতে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।

জানা গেছে, ইসিডিসির প্রস্তাবের কারণে চেলসির জন্য আর্লস কোর্টে স্টেডিয়াম তৈরি করা কঠিন হয়ে যেতে পারে। ইসিডিসির প্রস্তাব যদি গৃহীত হয়, তাহলে জমি কেনার খরচ অনেক বেড়ে যাবে।

এছাড়াও, স্থানীয় রাজনৈতিক সমর্থন পাওয়াও কঠিন হতে পারে, কারণ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা ইসিডিসির আবাসিক প্রকল্পের পক্ষে থাকার সম্ভাবনা বেশি।

চেলসির জন্য বিষয়টি বেশ কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। ক্লাবটিকে এখন লন্ডনের রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনা করতে হচ্ছে।

তবে, একটি ইতিবাচক দিক হলো, রাজধানী পরিকল্পনা বিভাগের কিছু কর্মকর্তার ধারণা, ইসিডিসির প্রস্তাবিত প্রকল্পটি বেশ ব্যয়বহুল হতে পারে।

এছাড়া, আর্লস কোর্টে একটি মাল্টি-ইউজ স্টেডিয়াম তৈরি হলে স্থানীয় অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে এবং সেখানে আবাসনেরও সুযোগ থাকবে।

নতুন স্টেডিয়াম তৈরির জন্য চেলসি কর্তৃপক্ষের পরিকল্পনা রয়েছে এবং তারা লিলিয়ে ব্রিজ ডিপোকে মাঠ তৈরির স্থান হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

ক্লাব কর্তৃপক্ষ বলছে, তারা এই বিষয়ে দ্রুত একটি সিদ্ধান্ত নিতে চাইছে।

তবে, মাঠ নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়ে ক্লাবের মালিকদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দিয়েছে।

ক্লাবের প্রধান শেয়ারহোল্ডার টড বোহলি এবং ক্লিয়ারলেক ক্যাপিটালের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হয়েছে।

বোহলি জানিয়েছেন, স্টেডিয়াম প্রকল্প নিয়ে মতবিরোধ দেখা দিলে তিনি ক্লিয়ারলেকের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করতে পারেন।

ক্লিয়ারলেক অবশ্য আর্লস কোর্টের বিষয়ে বিরোধী নয়, তবে তারা চায় একটি টেকসই এবং লাভজনক প্রস্তাব।

বোহলি ইঙ্গিত দিয়েছেন, এখানে এমন একটি স্টেডিয়াম তৈরি করা যেতে পারে, যেখানে অন্যান্য খেলা এবং কনসার্টের আয়োজন করা যাবে, যা ক্লাবের জন্য আয়ের উৎস হবে।

অন্যদিকে, স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে এই ধরনের পরিকল্পনার বিরোধিতা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ক্লাব সূত্র জানাচ্ছে, তারা এমন একটি স্টেডিয়াম তৈরি করতে চায়, যেখানে আন্তর্জাতিক ফুটবল টুর্নামেন্ট, অন্যান্য খেলা এবং বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজন করা যাবে।

চেলসির জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, জমি কেনার জন্য যেন তাদের ওপর কোনো চাপ সৃষ্টি না হয়।

ক্লাব কর্তৃপক্ষ প্রতিটি বিকল্প ভালোভাবে যাচাই করে দীর্ঘমেয়াদি একটি পরিকল্পনা করতে চাইছে।

চেলসির কর্মকর্তাদের মতে, আর্লস কোর্টে স্টেডিয়াম তৈরি করা তাদের জন্য সবচেয়ে বাস্তবসম্মত সমাধান হতে পারে।

এছাড়া, স্ট্যামফোর্ড ব্রিজ পুনর্নির্মাণ করাও সম্ভব, তবে সেখানে কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে।

বিশেষ করে মাঠটি একটি রেললাইনের পাশে অবস্থিত হওয়ায় কাজ করা কঠিন।

যদি তারা কোনো পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে অন্যান্য প্রতিদ্বন্দ্বী ক্লাবগুলোর চেয়ে পিছিয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

আর্সেনাল, টটেনহ্যাম এবং ওয়েস্ট হ্যাম ইতিমধ্যে বড় স্টেডিয়াম তৈরি করেছে।

লিভারপুল তাদের মাঠের সম্প্রসারণ করেছে এবং এভারটন তাদের মাঠ পরিবর্তন করতে যাচ্ছে।

ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডও এক লাখ ধারণক্ষমতার একটি স্টেডিয়াম বানানোর পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *