চেলসি: নতুন খেলোয়াড় এবং মাঠের পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা, বিতর্ক বাড়ছে।
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের দল চেলসির ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা এখন তুঙ্গে। ক্লাবটির নতুন ম্যানেজার এনজো মারেরার অধীনে দলবদলের বাজারে খেলোয়াড় কেনার হিড়িক এখনো চলছে। একইসাথে রয়েছে মাঠ সম্প্রসারণের পরিকল্পনা। তবে এতসবের মাঝে প্রশ্ন উঠছে, এই বিপুল বিনিয়োগ কি সফল হবে? নাকি আরও কিছু সময় অপেক্ষা করতে হবে?
চেলসির কর্মকর্তাদের খেলোয়াড় বাছাইয়ের আগ্রহ চোখে পড়ার মতো। সম্প্রতি স্পোর্টিং লিসবনের ১৭ বছর বয়সী উইঙ্গার জিওভানি কুইন্ডাকে তারা ৪৪ মিলিয়ন পাউন্ডে দলে ভিড়িয়েছে। এই বিষয়ে প্রিমিয়ার লিগের একটি ক্লাবের বিশ্লেষক জানিয়েছেন, চেলসির খেলোয়াড় বাছাইয়ের ধরন বেশ প্রশংসনীয়। জিওভানি কুইন্ডা আগামী মৌসুমেও লিজবনে ধারে খেলবেন। এছাড়া স্পোর্টিং লিসবন থেকে ২০ বছর বয়সী মিডফিল্ডার দারিও এসোগোকে ১৮.৪ মিলিয়ন পাউন্ডে দলে নেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তরুণ প্রতিভাবান খেলোয়াড়দের দলে ভেড়ানোর এই প্রক্রিয়া বেশ দ্রুত গতিতে চলছে। শোনা যাচ্ছে, সাউথ আমেরিকান ফুটবলের উঠতি তারকা এস্তেভাও এবং কেন্দ্রি পায়েজও খুব শীঘ্রই চেলসির জার্সি গায়ে চাপাবেন।
তবে মাঠের বাইরের চিত্রটা বেশ জটিল। ক্লাবটি বর্তমানে তাদের খেলোয়াড় কেনা এবং বিক্রির ক্ষেত্রে অনেক বেশি মনোযোগ দিচ্ছে। দলবদলের বাজারে তাদের এই আগ্রাসী মনোভাবে অনেকে অবাক হচ্ছেন। মাঠের খেলায় ভালো করার পাশাপাশি, সমর্থকদের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদী ফল নিয়ে আগ্রহ বাড়ছে। ক্লাবের মালিকানা পরিবর্তনের পর থেকে গত তিন বছরে মাঠের বাইরের পরিবেশ বেশ অস্থির ছিল। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলার যোগ্যতা অর্জন করা এখনো কঠিন, যদিও অসম্ভব নয়। ম্যানেজারের উপর চাপ থাকবে, কারণ প্রথম মৌসুমেই যদি চেলসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে কোয়ালিফাই করতে ব্যর্থ হয়, তবে তা হতাশাজনক হবে।
দলবদলের বাজারে এত খেলোয়াড় কেনাবেচা চললেও, মাঠের পরিবেশ স্থিতিশীল নয় বলেই মনে করা হচ্ছে। চেলসির কর্মকর্তাদের খেলোয়াড় বাছাইয়ের দক্ষতা আছে, তবে তরুণ খেলোয়াড়দের ভালোভাবে গড়ে তোলা এবং অভিজ্ঞ খেলোয়াড়দের কাছ থেকে তাদের শেখার সুযোগ করে দেওয়াটা একটা বড় চ্যালেঞ্জ।
এদিকে, ক্লাবের আর্থিক বিষয়গুলোও আলোচনার জন্ম দিয়েছে। ক্লাবটির মালিকানা পরিবর্তনের পর থেকে খেলোয়াড় কিনতে ১ বিলিয়ন পাউন্ডের বেশি খরচ হয়েছে। তবে তারা কিভাবে এই বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচ করছে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। শোনা যাচ্ছে, তারা তাদের নারী ফুটবল দল নিজেদের কাছেই বিক্রি করে প্রিমিয়ার লিগের নিয়ম ভেঙেছে।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলার যোগ্যতা অর্জন করতে না পারলে, ক্লাবের উপর আরও বেশি চাপ সৃষ্টি হবে। তবে সম্প্রতি টটেনহ্যামকে ১-০ গোলে হারানোর পর, মনে করা হচ্ছে দল ধীরে ধীরে ছন্দে ফিরছে। এনজো মারেরার কৌশল পরিবর্তনের বিষয়টিও ইতিবাচক। ইনজুরি থেকে ফিরে আসা নিকোলাস জ্যাকসন এবং ননির ম্যাডুয়েকের কারণে আক্রমণভাগ আরও শক্তিশালী হবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে কঠিন পরীক্ষা এখনো বাকি। ব্রেন্টফোর্ডের বিপক্ষে তাদের লড়তে হবে।
চেলসির ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল, এতে কোনো সন্দেহ নেই। তবে তাদের বর্তমানের দিকেও নজর রাখতে হবে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান