যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের কাছে একটি অভিবাসন কেন্দ্রে বিক্ষোভ প্রদর্শনের সময় বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা মূলত সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসন নীতির প্রতিবাদ জানাচ্ছিলেন। সম্প্রতি, এই ধরনের প্রতিবাদ কর্মসূচি বেড়ে যাওয়ায় পুলিশের ধরপাকড়ও বেড়েছে।
গত কয়েক মাসে, শিকাগোর ব্রডভিউ এলাকার একটি ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইস) অফিসের বাইরে বিক্ষোভকারীদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। বিক্ষোভকারীরা অভিবাসন নীতির তীব্র বিরোধিতা করে আসছেন। বিক্ষোভের সময় বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং তাদের মধ্যে কয়েকজনের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে।
গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন আ’কেশা লি নামে একজন নারী। তিনি জানান, গত ১৭ই অক্টোবর ব্রডভিউ আইস অফিসের কাছে বিক্ষোভ করার সময় পুলিশের সাথে ধাক্কাধাক্কি হয়। তিনি অভিযোগ করেন, পুলিশ তাকে লাঠি দিয়ে আঘাত করে এবং পরে গ্রেপ্তার করে। আ’কেশা’র দাবি, তিনি কোনো আইন ভাঙেননি এবং শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ করছিলেন। তাকে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা আটক রাখার পর মুক্তি দেওয়া হয়। পরে জানা যায়, তার বিরুদ্ধে পুলিশ প্রতিরোধের দুটি অভিযোগ আনা হয়েছে, যার শাস্তি হিসেবে এক বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।
আরেকজন বিক্ষোভকারী হলেন শন মিলস। তিনি আইস অফিসের ভেতরে প্রবেশ করতে গিয়ে গ্রেপ্তার হন। শন জানান, তিনি অভিবাসীদের প্রতি কর্তৃপক্ষের আচরণে অসন্তুষ্ট ছিলেন এবং সেখানকার পরিস্থিতি দেখতে চেয়েছিলেন। তিনি আরও বলেন, তাকে কথা বলার সুযোগ না দিয়েই পুলিশ গ্রেপ্তার করে। শন-এর বিরুদ্ধেও পুলিশি নির্দেশ অমান্য করার অভিযোগ আনা হয়েছে।
এই ঘটনার সাথে জড়িত তৃতীয় ব্যক্তি হলেন পল আইভেরি। তিনি একজন স্কুল ক্যাফেটেরিয়ার কর্মী এবং মানসিক ভিন্নভাবে সক্ষম একজন ব্যক্তি। কর্তৃপক্ষ জানায়, তিনি ফেডারেল এক কর্মকর্তাকে মারধর করেছেন। যদিও পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। ঘটনার দিন পল আইভেরিও ব্রডভিউ আইস অফিসের সামনে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন।
গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিদের অভিযোগ, তাদের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের অধিকার খর্ব করা হয়েছে। তাদের মতে, কর্তৃপক্ষের এমন পদক্ষেপ বাকস্বাধীনতা এবং সমাবেশের অধিকারের পরিপন্থী। স্থানীয় মানবাধিকার সংগঠনগুলোও এই ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে এবং গ্রেপ্তারকৃতদের প্রতি সমর্থন জানাচ্ছে।
এসব ঘটনার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন নীতি এবং প্রতিবাদ প্রদর্শনের অধিকারের মতো বিষয়গুলো নতুন করে আলোচনায় এসেছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন