শিকাগোতে মেক্সিকান স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের প্রস্তুতি চলছিল যখন সেখানে অভিবাসন কর্মকর্তাদের সম্ভাব্য অভিযানের উদ্বেগে সেখানকার মানুষের মধ্যে এক ধরনের ভীতি কাজ করছে।
যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরে মেক্সিকান স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের প্রস্তুতি চলছিল যখন সেখানে অভিবাসন কর্মকর্তাদের সম্ভাব্য অভিযানের উদ্বেগে সেখানকার মানুষের মধ্যে এক ধরনের ভীতি কাজ করছে। বিশেষ করে, শহরটির পিলসেন এলাকার হিস্পানিক সম্প্রদায়ের মানুষেরা এই পরিস্থিতিতে বেশ উদ্বিগ্ন।
প্রতি বছর, এই দিনে শিকাগোর রাস্তায় রাস্তায় মেক্সিকান সংস্কৃতির নানা রঙ দেখা যায়। স্থানীয়রা একত্রিত হয়ে তাদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি উদযাপন করে। বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মুখরিত থাকে চারপাশ।
এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি, তবে উদ্বেগের কারণে উদযাপনে কিছুটা পরিবর্তন এসেছে। স্বাধীনতা দিবসের আনন্দ আয়োজনে এবার কিছুটা ভাটা পড়েছে। শহরের অনেক স্থানে অনুষ্ঠান হয় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, আবার কোনো কোনোটি স্থগিত করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসন নীতির কড়া অবস্থানের কারণে সেখানকার মানুষের মধ্যে এই ভীতি ছড়িয়ে পরেছে। অভিবাসন ও কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট বা আইস (ICE) কর্মকর্তাদের সম্ভাব্য অভিযান নিয়ে উদ্বেগের কারণে অনেকে তাদের স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান বাতিল করতে বাধ্য হয়েছেন।
পিলসেন এলাকার অনেক বাসিন্দা জানিয়েছেন, তারা তাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে চান। তাদের মতে, কঠিন পরিস্থিতিতে ঐক্যবদ্ধ থাকাটা খুব জরুরি।
শিকাগোর মেয়র ব্রান্ডন জনসনও স্থানীয়দের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, ফেডারেল কর্মকর্তাদের সঙ্গে শহরের পুলিশ কোনো ধরনের সহযোগিতা করবে না। এছাড়া, স্থানীয় সরকার সেখানকার বাসিন্দাদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে।
অভিবাসন কর্মকর্তাদের মুখোমুখি হলে তাদের কী ধরনের অধিকার রয়েছে, সে বিষয়ে বাসিন্দাদের অবগত করা হচ্ছে।
তবে, পরিস্থিতি বিবেচনায় অনেক বড় অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছে। যেমন, ‘ফিয়েস্তা প্যাট্রিয়াস’ নামক একটি বড় উৎসব ১৪ সেপ্টেম্বরের পরিবর্তে নভেম্বরের শুরুতে অনুষ্ঠিত হবে।
আয়োজকরা জানিয়েছেন, জনগণের নিরাপত্তার কথা ভেবেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ওয়াকন্ডা শহরেও একটি উৎসব বাতিল করা হয়েছে। এছাড়া, এল গ্রিটো শিকাগো নামক একটি উৎসবও স্থগিত করা হয়েছে।
স্থানীয়দের মধ্যে যারা এখনো অনুষ্ঠান করছেন, তারা সবসময় সতর্ক থাকছেন। তাদের গলায় বাঁশি দেখা যায়, যা বিপদ সংকেত হিসেবে ব্যবহার করার জন্য রাখা হয়েছে।
সবাই তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন হচ্ছেন এবং যেকোনো পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকছেন।
তথ্য সূত্র: সিএনএন