মদ খেয়ে বন্ধু bonding! বন্য শিম্পাঞ্জিদের মজাদার দৃশ্য

আফ্রিকার জঙ্গলে শিম্পাঞ্জিরা দলবদ্ধভাবে অ্যালকোহলযুক্ত ফল ভাগ করে খাচ্ছে, এমনটাই দেখা গেছে সম্প্রতি। বিজ্ঞানীরা ক্যামেরাবন্দী করেছেন তাদের এই আজব কাণ্ড।

যুক্তরাজ্যের এক্সেটর বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক গিনি-বিসাউয়ের কান্টানহেজ জাতীয় উদ্যানে বন্য শিম্পাঞ্জিদের এই ছবি তুলেছেন।

গবেষকরা জানিয়েছেন, শিম্পাঞ্জিরা যে ফলগুলো খাচ্ছিল, তার মধ্যে সামান্য পরিমাণে অ্যালকোহল ছিল। বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, এই ধরনের আচরণ তাদের মধ্যে সামাজিক বন্ধন আরও দৃঢ় করতে সাহায্য করে।

মানুষের মধ্যে যেমন একসাথে বসে মদ্যপান করার একটা চল আছে, যা বন্ধুত্বের সম্পর্ককে আরও মজবুত করে, তেমনি সম্ভবত শিম্পাঞ্জিরাও দলবদ্ধভাবে ফল খাওয়ার মাধ্যমে তাদের মধ্যে সম্পর্ক আরও গভীর করে তোলে।

গবেষণায় দেখা গেছে, শিম্পাঞ্জিরা মূলত গাঁজানো “আফ্রিকান রুটি ফল” খাচ্ছিল। পরীক্ষার পর জানা গেছে, ফলগুলোতে ০.৬১% পর্যন্ত অ্যালকোহল ছিল।

যদিও অ্যালকোহলের পরিমাণ খুব বেশি নয়, তবে শিম্পাঞ্জিরা প্রচুর পরিমাণে ফল খাচ্ছিল। গবেষকদের মতে, এটা অনেকটা হালকা বিয়ার পান করার মতো।

গবেষক দলের অন্যতম সদস্য কিম্বার্লি হকিংস বলেন, “শিম্পাঞ্জিরা সব সময় খাবার ভাগ করে খায় না।

তাই গাঁজানো ফল ভাগ করে খাওয়াটা তাদের জন্য হয়তো খুব গুরুত্বপূর্ণ।” তিনি আরও জানান, এর আগে ২০১৫ সালে প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছিল, পশ্চিম আফ্রিকার কিছু শিম্পাঞ্জি মানুষের তৈরি পাম গাছের রস থেকে তৈরি করা অ্যালকোহল পান করে।

এমনকি তাদের মধ্যে কেউ কেউ অন্যদের রাতে থাকার জন্য বাসা তৈরি করতেও বাধা দিত।

গবেষণায় আরও দেখা গেছে, শিম্পাঞ্জিরা নারী-পুরুষ নির্বিশেষে একসঙ্গে ফলগুলো ভাগ করে খাচ্ছিল।

“চিপ” ও “আতে” নামের দুটি স্ত্রী শিম্পাঞ্জিকে দেখা গেছে, তারা একটি বড় আকারের ফলের টুকরোর বদলে ছোট কিন্তু গাঁজানো একটি ফল পছন্দ করছে।

“ম্যান্ডজাম্বে” এবং “গ্যারি” নামের দুটি পুরুষ শিম্পাঞ্জিকে দেখা যায়, তারা পাকা ফলের কাছে আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে এগিয়ে আসছিল। পরে অবশ্য সবাই মিলেই ফলগুলো উপভোগ করে।

গবেষকরা প্রশ্ন তুলেছেন, মানুষের ভোজনরসিকতার শুরুটা কি তবে এই ধরনের আচরণ থেকে?

কিম্বার্লি হকিংস বলেছেন, “আমাদের আরও গবেষণা করতে হবে যে, শিম্পাঞ্জিরা ইচ্ছাকৃতভাবে অ্যালকোহলযুক্ত ফল খুঁজে বের করে কি না এবং তারা কীভাবে এটি হজম করে।

তবে এই আচরণ সম্ভবত ভোজনরসিকতার প্রাথমিক পর্যায় হতে পারে। যদি তাই হয়, তাহলে মানুষের ভোজনরসিকতার ঐতিহ্য সম্ভবত বিবর্তনের গভীরে প্রোথিত।

এই গবেষণাটি “কারেন্ট বায়োলজি” জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *