চীনের নতুন চমক: বিশ্বকে তাক লাগাতে বৃহত্তম জাতীয় উদ্যান!

চীনের বিশাল জাতীয় উদ্যান ব্যবস্থা: প্রকৃতির প্রতি চীনের নতুন অঙ্গীকার। চীন খুব দ্রুত একটি বিশাল জাতীয় উদ্যান ব্যবস্থা গড়ে তুলছে, যার লক্ষ্য হল ২০৩৫ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়িয়ে যাওয়া।

এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হলো বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক পরিবেশ সংরক্ষণ, বিপন্ন প্রজাতির সুরক্ষা এবং পরিবেশবান্ধব পর্যটনকে উৎসাহিত করা। বর্তমানে, পাঁচটি উদ্যান খোলা হয়েছে, যা চীনের বিভিন্ন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য তুলে ধরে: আল্পাইন অঞ্চল থেকে শুরু করে গ্রীষ্মমন্ডলীয় বৃষ্টি বন পর্যন্ত।

এই উদ্যানগুলো স্থানীয় অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখতেও সাহায্য করবে। যুক্তরাষ্ট্রের থেকে শিক্ষা নিয়ে চীন এই উদ্যান ব্যবস্থা তৈরি করছে।

স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সঙ্গে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের একটি সহযোগী সম্পর্ক গড়ে তোলার মাধ্যমে চীন অন্যান্য উদ্যান ব্যবস্থার ভুলগুলো শুধরে নিতে চাইছে। যেমন, আদিবাসী সম্প্রদায়ের স্থানান্তরের মতো বিষয়গুলো তারা সতর্কতার সঙ্গে বিবেচনা করছে।

চীনের এই বিশাল কর্মযজ্ঞের কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরা হলো:

  • লক্ষ্যমাত্রা: ২০৩৫ সালের মধ্যে এই পার্ক ব্যবস্থা সম্পন্ন করা।
  • জমির পরিমাণ: ২7২ মিলিয়ন একর (প্রায় ১,১০,০০০ বর্গকিলোমিটার)।
  • উদ্যানের সংখ্যা: ৪৯টি।
  • বর্তমানে খোলা উদ্যান: ৫টি।
  • সংরক্ষিত প্রধান প্রজাতি: জায়ান্ট পান্ডা, সাইবেরীয় বাঘ (আমুর টাইগার), এশীয় হাতি, আমুর চিতাবাঘ, তিব্বতি হরিণ, হাইনান গিবন ইত্যাদি।
  • উল্লেখযোগ্য উদ্যান: জায়ান্ট পান্ডা জাতীয় উদ্যান, উত্তর-পূর্ব চীন বাঘ ও চিতাবাঘ জাতীয় উদ্যান, সানজিয়াংইউয়ান জাতীয় উদ্যান, হাইনান গ্রীষ্মমন্ডলীয় বৃষ্টি বন জাতীয় উদ্যান, এবং উয়ি পর্বত জাতীয় উদ্যান।
  • অন্তর্ভুক্ত প্রদেশসমূহ: সিচুয়ান, শানসি, গানসু, কিংহাই, হাইনান, ফুজিয়ান, এবং জিংসি।
  • আয়তনের তুলনা: সমগ্র পার্ক ব্যবস্থা টেক্সাসের চেয়ে বড়, এবং সানজিয়াংইউয়ান জাতীয় উদ্যান ফ্লোরিডার চেয়ে বড়।

চীনের এই নতুন উদ্যোগ আন্তর্জাতিক প্রকৃতি সংরক্ষণ সংস্থার (আইইউসিএন) মানদণ্ড অনুসরণ করে তৈরি করা হয়েছে। এই উদ্যানগুলো প্রধানত সংরক্ষণ এবং সীমিত পর্যটনের জন্য তৈরি করা হয়েছে, যেখানে কঠোর নিয়ম-কানুন ও আবাসিক এলাকার ব্যবস্থা নেই।

চীনের এই জাতীয় উদ্যান ব্যবস্থা বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রক্ষায়, অর্থনৈতিক উন্নয়নে এবং জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে। চীনের এই পদক্ষেপ বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ হতে পারে, যেখানে বনভূমি ও জীববৈচিত্র্য রক্ষার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।

ভবিষ্যতে, চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে এই বিষয়ে সহযোগিতা ও জ্ঞান আদান-প্রদানের সম্ভাবনাও রয়েছে।

তথ্যসূত্র: ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *