চীনের পূর্বাঞ্চলে একটি রাসায়নিক কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে, যার ফলে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ উদ্ধার অভিযান শুরু করেছে। মঙ্গলবার স্থানীয় সময় অনুযায়ী দুপুরের কিছুক্ষণ আগে শানডং প্রদেশের গাওমি শহরে অবস্থিত শানডং ইউদাও কেমিক্যাল কারখানায় এই বিস্ফোরণ ঘটে।
বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে এর ফলে বিশাল আকারের ধোঁয়ার কুণ্ডলী আকাশে উড়তে দেখা যায় এবং কাছাকাছি অবস্থিত ভবনগুলোর জানালার কাঁচ ভেঙে যায়।
খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই স্থানীয় দমকল বাহিনী ৫৫টি গাড়ি ও ২৩২ জন কর্মী নিয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। জরুরি ব্যবস্থাপনা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ও উদ্ধার কাজে সহায়তার জন্য একটি বিশেষ দল পাঠিয়েছে।
তবে, তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, তারা বিকট শব্দে বিস্ফোরণটি শুনতে পান। বিস্ফোরণের সময়কার একটি ভিডিওতে দেখা যায়, কারখানা এলাকা ধোঁয়ায় ঢেকে গেছে।
এছাড়া, বিস্ফোরণের কারণে কাছাকাছি অবস্থিত কিছু ভবনের জানালা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঘটনার সময় কারখানা থেকে প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার দূরে অবস্থিত একটি হোটেলের এক কর্মী জানান, তিনি দুপুরে বিকট শব্দ শুনতে পান।
তিনি আরও জানান, শব্দটা বেশ জোরালো ছিল এবং কয়েক মুহূর্ত স্থায়ী হয়েছিল।
বিস্ফোরণের প্রায় ৬ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত একটি কারখানার কর্মী জানান, তিনি একটি বড় ধরনের শব্দ এবং কম্পন অনুভব করেছেন। তিনি আরও বলেন, “বাতাসের তীব্রতা এত বেশি ছিল যে আমি অফিসের বাইরে যেতে সাহস পাইনি।
আমার কারখানার দরজা ও জানালাগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।”
শানডং ইউদাও কেমিক্যাল, হিমিল গ্রুপের মালিকানাধীন। হিমিল গ্রুপ আবার তালিকাভুক্ত হিমিল মেকানিক্যাল-এরও মালিক।
রয়টার্সের তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার বিকেলে হিমিল মেকানিক্যালের শেয়ারের দাম প্রায় ৪ শতাংশ কমে যায়।
জানা গেছে, শানডং ইউদাও কেমিক্যাল কোম্পানিটি ২০১৯ সালের আগস্ট মাসে প্রতিষ্ঠিত হয়। তাদের ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এই কারখানার জমির পরিমাণ প্রায় ৪৬ হেক্টরের বেশি এবং এখানে ৩০০ জনের বেশি কর্মী কাজ করেন।
তারা কীটনাশক, ঔষধ এবং রাসায়নিক উপাদান তৈরি ও বিক্রি করে থাকে।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে চীনের তিয়ানজিন শহরে একটি রাসায়নিক গুদামে ভয়াবহ বিস্ফোরণে ১০০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছিল এবং বাতাসে বিষাক্ত ধোঁয়া ছড়িয়ে পরেছিল।
এই ঘটনার পর চীনে শিল্প কারখানার নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়।
তথ্য সূত্র: সিএনএন