কোভিড-১৯ ভাইরাসটির উৎপত্তি নিয়ে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বিতর্ক নতুন মোড় নিয়েছে। সম্প্রতি, চীন এক শ্বেতপত্রে (white paper) দাবি করেছে যে ভাইরাসটি সম্ভবত যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম দেখা দিয়েছিল।
এর প্রতিক্রিয়ায়, তারা যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কোভিড-১৯ এর উৎস নিয়ে রাজনীতি করার অভিযোগ তুলেছে।
চীনের এই পদক্ষেপ মূলত প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের অভিযোগের জবাব। ট্রাম্প প্রশাসন এর আগে চীনের একটি গবেষণাগার থেকে ভাইরাসটি ছড়িয়েছিল বলে অভিযোগ করেছিল।
শ্বেতপত্রে চীন এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে এবং যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে তথ্য গোপন করার অভিযোগ তোলে।
চীনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)-সহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে সময় মতো তথ্য বিনিময় করেছে। এমনকি, WHO এবং চীনের যৌথ গবেষণায়ও ল্যাব থেকে ভাইরাস ছড়ানোর সম্ভাবনা খুবই কম বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
চীনের শ্বেতপত্রে আরও বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের উচিত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্বেগকে গুরুত্ব দেওয়া। এতে আরও দাবি করা হয়, এমন অনেক প্রমাণ রয়েছে যা ইঙ্গিত করে যে, সরকারিভাবে ঘোষিত সময়ের আগেও যুক্তরাষ্ট্রেই কোভিড-১৯ এর প্রাদুর্ভাব ঘটেছিল।
চীনের পক্ষ থেকে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের মিসৌরির একটি আদালতে চীনের বিরুদ্ধে হওয়া মামলার কথা। যেখানে কোভিড-১৯ মোকাবেলায় সুরক্ষা সরঞ্জাম মজুদ এবং প্রাদুর্ভাব লুকানোর অভিযোগে চীনকে প্রায় ২৪ বিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ দিতে বলা হয়েছে।
অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা (CIA) জানুয়ারিতে জানিয়েছিল, ভাইরাসটি সম্ভবত চীনের একটি গবেষণাগার থেকে এসেছে। যদিও তারা তাদের এই মূল্যায়নে ‘কম আত্মবিশ্বাসী’ ছিল এবং তারা এটাও উল্লেখ করেছে যে, ভাইরাসটির প্রাকৃতিক উৎস থেকেও আসার সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের একজন কর্মকর্তা শ্বেতপত্রের বিষয়ে বলেছেন, ভাইরাসটির উৎস অনুসন্ধানের পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের দিকে মনোযোগ দেওয়া উচিত।
বর্তমান পরিস্থিতিতে, কোভিড-১৯ এর উৎস নিয়ে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যেকার এই বিতর্ক আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। ভবিষ্যতে এর প্রভাব কেমন হবে, সেদিকেই এখন সবার দৃষ্টি।
তথ্য সূত্র: CNN