চীনের একটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান, DeepSeek, সম্প্রতি তাদের R1 মডেলের একটি নতুন সংস্করণ উন্মোচন করেছে। প্রযুক্তি বিশ্বে এই পদক্ষেপটি বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছে, কারণ এটি সরাসরি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলির সঙ্গে তীব্র প্রতিযোগিতার ইঙ্গিত দেয়।
এই মডেলের আপডেটের ফলে উন্নত কোড জেনারেশন ক্ষমতা পরিলক্ষিত হয়েছে, যা ওপেনএআই (OpenAI)-এর ছোট আকারের মডেলগুলির কাছাকাছি পারফর্ম করতে সক্ষম। এই খবর প্রযুক্তি বিশ্বে নতুন করে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।
জানা গেছে, DeepSeek তাদের R1-0528 সংস্করণটি ডেভেলপার প্ল্যাটফর্ম Hugging Face-এ প্রকাশ করেছে। যদিও তারা এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো ঘোষণা দেয়নি বা মডেলটির বিস্তারিত বৈশিষ্ট্য জানায়নি।
তবে, ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, বার্কলে, এমআইটি এবং কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের তৈরি করা লাইভকোডবেঞ্চ (LiveCodeBench) নামক একটি বেঞ্চমার্কের ফলাফলে দেখা গেছে, DeepSeek-এর এই নতুন মডেলটি কোড তৈরি করার ক্ষেত্রে OpenAI-এর o4 mini এবং o3 মডেলের কাছাকাছি পারফর্ম করেছে। এমনকি xAI-এর Grok 3 mini এবং আলিবাবার Qwen 3-এর চেয়েও ভালো ফল করেছে।
গত জানুয়ারিতে DeepSeek যখন R1 মডেলটি প্রথম বাজারে আনে, তখন এটি প্রযুক্তিখাতে বিশাল প্রভাব ফেলেছিল। বিশেষ করে, এর উন্নত প্রযুক্তি এবং তুলনামূলক কম খরচের কারণে চীনের বাইরে, বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দামে পতন দেখা দেয়।
অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন, এই ঘটনার মাধ্যমে চীন প্রমাণ করেছে যে এআই-এর উন্নতিতে বিশাল বিনিয়োগের প্রয়োজন নেই। এরপর, গুগল (Google) এবং ওপেনএআই-এর মতো কোম্পানিগুলোও তাদের মডেলের দাম কমিয়েছে এবং নতুন মিনি মডেল উন্মোচন করেছে, যা DeepSeek-এর সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে সাহায্য করবে।
DeepSeek-এর পক্ষ থেকে এখনো R2 মডেলের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসেনি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, খুব শীঘ্রই এটি বাজারে আসবে।
মার্চ মাসে DeepSeek তাদের V3 লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেলেরও একটি সংস্করণ প্রকাশ করে।
এআই প্রযুক্তির এই দ্রুত অগ্রগতি বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, উন্নত বিশ্বের এই পরিবর্তনের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে না পারলে, আমরা পিছিয়ে পড়বো।
তাই, DeepSeek-এর এই নতুন মডেল এবং এর ভবিষ্যৎ কর্মক্ষমতা সম্পর্কে অবগত থাকা এবং বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতে এর প্রভাবগুলো বিবেচনা করা জরুরি।
তথ্য সূত্র: CNN
