আলোচনা চায় যুক্তরাষ্ট্র! চীনের সিদ্ধান্ত কী?

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বাণিজ্য আলোচনা শুরুর প্রস্তাবটি পর্যালোচনা করছে চীন। সম্প্রতি, বেইজিং জানিয়েছে, ওয়াশিংটন তাদের সাথে আলোচনার আগ্রহ দেখাচ্ছে।

তবে, আলোচনার শর্ত হিসেবে তারা যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে ‘সদিচ্ছা’ এবং কোনো প্রকার ‘জোর-জবরদস্তি’ অথবা ‘চাঁদাবাজি’ দেখতে চায়।

চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় শুক্রবার এক বিবৃতিতে জানায়, যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মাধ্যমে তাদের সাথে বাণিজ্য নিয়ে কথা বলতে চাইছে।

তবে, বেইজিং এখনো পর্যন্ত কোনো আলোচনার অগ্রগতি হয়েছে বলে নিশ্চিত করেনি। তারা জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আলোচনার প্রস্তাব এলেও, তারা বিষয়টি সতর্কভাবে বিবেচনা করছে।

অন্যদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন যে, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর সাথে তার ফোনালাপ হয়েছে এবং আলোচনা চলছে।

তবে, চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যুক্তরাষ্ট্রের এই দাবিকে ‘ভুল বার্তা’ হিসেবে অভিহিত করেছে। তারা বলেছে, আলোচনার বিষয়টি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র জনমনে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।

এই বিষয়ে চীনের একজন প্রভাবশালী ব্লগার, যিনি ‘চেয়ারম্যান র‍্যাবিট’ নামে পরিচিত, তিনি বৃহস্পতিবার এক ব্লগ পোস্টে লিখেছেন, তিনি জানতে পেরেছেন যে, যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন চ্যানেলের মাধ্যমে চীনের সাথে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য বিষয়ক আলোচনার জন্য যোগাযোগ করছে।

এই দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য যুদ্ধ নতুন নয়। গত এপ্রিল মাস থেকে যুক্তরাষ্ট্র চীনের পণ্যের উপর ১৪৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করেছে।

এর জবাবে চীনও পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে ১২৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক বসিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে উভয় দেশই চাইছে, এই বাণিজ্য যুদ্ধের প্রভাব কমানো যায় কি না।

বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে যে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে, তা কমানোর জন্য উভয় দেশই তাদের শুল্কের কিছু ক্ষেত্রে ছাড় দিয়েছে।

তবে, দুই পক্ষের কেউই প্রথম পদক্ষেপ নিতে রাজি নয়।

চীনের কর্মকর্তারা আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির পরিবর্তনের সাথে নিজেদের মানিয়ে নেওয়ার কথা বলছেন।

যদিও তারা সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের নাম উল্লেখ করেননি, তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রকাশিত একটি ভিডিওতে যুক্তরাষ্ট্রকে একনায়ক হিসেবে অভিযুক্ত করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের এমন আচরণের কাছে নতি স্বীকার করা ‘বিষ পান করার’ মতো।

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র ‘ডি মিনিমিস’ নামে পরিচিত একটি শুল্ক ফাঁকি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এর ফলে কম মূল্যের পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে শুল্ক ছাড়াই প্রবেশের যে সুযোগ ছিল, সেটি বন্ধ হয়ে যাবে। এই সিদ্ধান্তের ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে চীনা রপ্তানিকারকরা।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, চীন একটি বাণিজ্য চুক্তিতে আসতে আগ্রহী হবে। যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট বলেছেন, ‘শুরুতে আমাদের উত্তেজনা কমাতে হবে।

এরপর আমরা একটি বৃহত্তর বাণিজ্য চুক্তির দিকে মনোযোগ দেব।’

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *