চীনের রাজধানী বেইজিং সহ বেশ কয়েকটি অঞ্চলে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের কারণে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। তীব্র বাতাসের সঙ্গে বালুঝড়ের কারণে উড়োজাহাজ চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে, পার্ক ও বিনোদন কেন্দ্রগুলো বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
কর্তৃপক্ষ সেখানকার বাসিন্দাদের জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হতে নিষেধ করেছে। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, গত কয়েক দশকের মধ্যে এত শক্তিশালী ঝড় এই অঞ্চলে দেখা যায়নি।
শনিবার বেইজিংয়ে বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৪৮ কিলোমিটার পর্যন্ত। এর ফলে, শহরের দুটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, বেইজিং ক্যাপিটাল ও ড্যাক্সিং, ৬৯৩টি ফ্লাইট বাতিল করতে বাধ্য হয়।
শুধু তাই নয়, অনেক ট্রেনের যাত্রা বাতিল করা হয়েছে। বেইজিং কর্তৃপক্ষ জরুরি অবস্থা জারি করে বাসিন্দাদের অপ্রয়োজনীয় ভ্রমণ এড়িয়ে চলতে বলেছে। প্রায় ২ কোটি ২০ লাখ মানুষকে সতর্ক করে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
চীনের উত্তরাঞ্চলে আঘাত হানা এই ঝড় মঙ্গোলিয়া থেকে আসা একটি শীতল বায়ুপ্রবাহের ফল। এর প্রভাবে শুধু বেইজিং নয়, চীনের অভ্যন্তরীণ মঙ্গোলিয়া, সাংহাই এবং ইয়াংজি নদী অঞ্চলের কাছাকাছি এলাকাতেও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
বিভিন্ন স্থানে গাছ উপড়ে গেছে, গাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বেইজিংয়ের বিখ্যাত নিষিদ্ধ নগরী, গ্রীষ্মকালীন প্রাসাদ এবং স্বর্গের মন্দিরসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
রবিবার অনুষ্ঠিতব্য একটি ম্যারাথন প্রতিযোগিতা, যেখানে মানুষের সঙ্গে রোবটদের দৌড়ানোর কথা ছিল, সেটিও বাতিল করা হয়েছে।
ঝড়ের কারণে আটটি প্রদেশের সড়ক যোগাযোগ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছে। বালুঝড়ের কারণে দৃশ্যমানতা কমে যাওয়ায় অনেক জায়গায় গাড়ি চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে।
আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, এই পরিস্থিতি আরও কয়েক দিন চলতে পারে।
আবহাওয়ার এই প্রতিকূল পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়েছে। বিশেষ করে খাদ্য সরবরাহকারী কর্মীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই তাদের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করেছেন এবং খাবার সরবরাহ বন্ধ রাখার কথা বলছেন।
চীন সরকার দীর্ঘদিন ধরে এই অঞ্চলের বালুঝড় প্রতিরোধের চেষ্টা করছে। বেইজিং শহরটি একটি শুষ্ক অঞ্চলের কাছাকাছি অবস্থিত হওয়ায় এখানে প্রায়ই বালুঝড়ের সৃষ্টি হয়।
এই ঝড়গুলি দৃষ্টিসীমা শূন্যের কাছাকাছি নিয়ে আসে, যা জনজীবনকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা