চীনের অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের ওপর জোর দিচ্ছে দেশটির ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টি। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে আগামী পাঁচ বছরের জন্য একটি উন্নয়ন পরিকল্পনা অনুমোদন করা হয়েছে, যেখানে এই লক্ষ্যের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে চীন সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, কারণ তারা এখন অত্যাধুনিক সেমিকন্ডাক্টর ও অন্যান্য উচ্চ প্রযুক্তির সরঞ্জামের উপর যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণের কারণে নিজস্ব সক্ষমতা বাড়াতে চাইছে।
কমিউনিস্ট পার্টির এই পদক্ষেপকে বিশ্লেষকরা তাৎপর্যপূর্ণ হিসেবে দেখছেন। তাদের মতে, এর মাধ্যমে চীন অভ্যন্তরীণভাবে প্রযুক্তিগত স্বাধীনতা অর্জনের পাশাপাশি অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে আরও সুসংহত হওয়ার চেষ্টা করছে।
ফ্রান্সের বিনিয়োগ ব্যাংক নাতিক্সের একজন ঊর্ধ্বতন অর্থনীতিবিদ গ্যারি এনজি’র মতে, এই পরিকল্পনার মাধ্যমে চীন সম্ভবত যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আরও কঠোর অবস্থান নেবে। তিনি আরও জানান, পাঁচ বছর আগের পরিকল্পনার তুলনায় এবার প্রযুক্তিগত স্বয়ংসম্পূর্ণতা, আয় বিতরণ এবং পরিবেশবান্ধব জ্বালানির দিকে মনোযোগ আরও বাড়ানো হয়েছে।
বৈঠকে শুধু অর্থনৈতিক পরিকল্পনাই নয়, চীনের সামরিক বাহিনীতেও এসেছে পরিবর্তন। সামরিক কমিশনের ভাইস-চেয়ারম্যান হিসেবে ঝাং শেংমিনের নাম ঘোষণা করা হয়েছে।
এর আগে, কমিউনিস্ট পার্টি থেকে বহিষ্কার করা হয় দেশটির শীর্ষস্থানীয় কয়েকজন সামরিক কর্মকর্তাকে। ঝাং শেংমিন বর্তমানে পিপলস লিবারেশন আর্মির রকেট ফোর্সের একজন জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
চীনের এই নতুন নীতি কৌশল বাংলাদেশের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের ব্যবসা-বাণিজ্য এবং প্রযুক্তিগত সহযোগিতার সম্পর্ক বিদ্যমান।
চীনের এই স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার প্রবণতা ভবিষ্যতে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য এবং বিনিয়োগের ক্ষেত্রে নতুন সম্ভাবনা তৈরি করতে পারে। একই সঙ্গে, এটি বাংলাদেশের প্রযুক্তিখাতে নিজস্ব সক্ষমতা বাড়ানোর ক্ষেত্রেও একটি গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা দিতে পারে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস