মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একজন শীর্ষ কমান্ডার ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে নিরাপত্তা ঝুঁকির বিষয়ে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে চীন এবং উত্তর কোরিয়া রাশিয়াকে যে সামরিক সহায়তা দিচ্ছে, তার ফলে এই অঞ্চলে নিরাপত্তা সংকট তৈরি হতে পারে।
বিষয়টি নিয়ে সম্প্রতি মার্কিন সিনেটের সশস্ত্র পরিষেবা কমিটির শুনানিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেন ইন্দো-প্যাসিফিক কমান্ডের প্রধান অ্যাডমিরাল স্যামুয়েল পাপারো।
পাপারো জানান, ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়াকে সহায়তা করতে চীন দেশটির সামরিক সরঞ্জাম ও অত্যাধুনিক প্রযুক্তি সরবরাহ করছে। এর বিনিময়ে চীন সম্ভবত সাবমেরিন প্রযুক্তি সহ অন্যান্য সামরিক খাতে রাশিয়ার কাছ থেকে সাহায্য নিচ্ছে।
তিনি উল্লেখ করেন, রাশিয়াকে প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ সরবরাহ করার ক্ষেত্রে চীনের ভূমিকা ৭০ শতাংশ এবং পুরোনো প্রযুক্তির চিপ সরবরাহের ক্ষেত্রে ৯০ শতাংশ।
পাশাপাশি, উত্তর কোরিয়াও রাশিয়াকে আর্টিলারি শেল এবং স্বল্প পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করছে। ধারণা করা হচ্ছে, এর পরিবর্তে উত্তর কোরিয়া আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র পেতে পারে।
অ্যাডমিরাল পাপারো বলেন, ‘এটা এমন একটি লেনদেন, যেখানে প্রতিটি দেশ একে অপরের দুর্বলতাগুলো পূরণ করে পারস্পরিক সুবিধা অর্জন করছে।’
শুনানিতে, কোরিয়াস্থ মার্কিন বাহিনীর কমান্ডার জেনারেল জেভিয়ার ব্রুনসন উত্তর কোরিয়ার সামরিক সক্ষমতা বৃদ্ধির বিষয়টি তুলে ধরেন। তিনি জানান উত্তর কোরিয়া অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং ১.৩ মিলিয়নের বেশি সেনা সদস্যের একটি শক্তিশালী সামরিক বাহিনী তৈরি করেছে।
পাপারো যোগ করেন, উত্তর কোরিয়ার এই সামরিক সক্ষমতা যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্রদের জন্য সরাসরি হুমকি স্বরূপ।
মার্কিন কমান্ডার আরও জানান, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার পক্ষে লড়াই করার জন্য উত্তর কোরিয়া হাজার হাজার সেনা পাঠিয়েছে। এছাড়া, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি অভিযোগ করেছেন, রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধে তাদের পক্ষে লড়ার জন্য চীনা ভাড়াটে সৈন্য নিয়োগ করছে।
জেলেনস্কির দাবি, ইতোমধ্যে ১৫০ জনের বেশি চীনা ভাড়াটে সৈন্য যুদ্ধক্ষেত্রে সক্রিয় রয়েছে এবং বেইজিং এই বিষয়ে অবগত। যদিও চীন এই অভিযোগকে ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ বলে অভিহিত করেছে।
ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক উপস্থিতির কথা উল্লেখ করে পাপারো জানান, বর্তমানে দক্ষিণ কোরিয়ায় ২৮,৫০০ মার্কিন সেনা মোতায়েন রয়েছে।
রাশিয়া ও চীনের মধ্যে ক্রমবর্ধমান সম্পর্ক এই অঞ্চলে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা এবং যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান