আতঙ্কে বিনিয়োগকারীরা! পানামা বন্দর নিয়ে চীনের কঠোর বার্তা

চীনের পক্ষ থেকে পানামা খালের বন্দর বিক্রির পরিকল্পনার তীব্র সমালোচনা করা হয়েছে। এই বন্দরগুলো ব্ল্যাকরক নামক একটি মার্কিন বিনিয়োগকারী দলের কাছে বিক্রি করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

বেইজিংয়ের এই প্রতিক্রিয়ার জেরে বন্দরগুলোর মালিক হংকংভিত্তিক কোম্পানি সি কে হাচ্চিসনের শেয়ারের দামে বড় পতন দেখা গেছে।

জানা গেছে, ব্ল্যাকরকের নেতৃত্বে একটি বিনিয়োগকারী দল ২ হাজার ২৮০ কোটি মার্কিন ডলার খরচ করে পানামা খালের বালবোয়া এবং ক্রিস্টোবাল বন্দর দুটি কিনতে চাইছে। এছাড়াও, সি কে হাচ্চিসনের অধীনে থাকা আরও ২৩টি দেশের ১৯০টির বেশি জেটি-সহ মোট ৪৩টি বন্দরের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ারও পরিকল্পনা রয়েছে তাদের।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং এক সংবাদ সম্মেলনে এই বিষয়ে সরাসরি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে তিনি চীনের অবস্থান পরিষ্কার করে বলেন, “অন্যান্য দেশের বৈধ অধিকার ও স্বার্থের ওপর আঘাত হানতে অর্থনৈতিক চাপ, আধিপত্যবাদ এবং নিপীড়নমূলক আচরণের বিরুদ্ধে চীন সবসময়ই দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়েছে।

হংকংয়ের নেতারাও চীনের এই মতের সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন। হংকংয়ের প্রধান জন লি এই প্রসঙ্গে বলেন, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য এবং অর্থনৈতিক সম্পর্কগুলোতে কোনো প্রকার চাপ প্রয়োগ বা নিপীড়নমূলক কৌশল ব্যবহারের আমরা বিরোধী।

ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, চীনের শীর্ষ বাজার নিয়ন্ত্রক সহ বেশ কয়েকটি সরকারি সংস্থাকে এই চুক্তির নিরাপত্তা এবং অন্য কোনো ধরনের নিয়মভঙ্গ হয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির শীর্ষস্থানীয় নেতারা। এই খবরের জেরে মঙ্গলবার সি কে হাচ্চিসনের শেয়ারের দাম ৫ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়।

হংকং একসময় ব্রিটিশ উপনিবেশ ছিল, যা ১৯৯৭ সালে চীনের শাসনের অধীনে আসে। বেইজিংয়ের সঙ্গে হওয়া একটি বিশেষ চুক্তির মাধ্যমে হংকংকে স্বায়ত্তশাসন এবং চীনের মূল ভূখণ্ডের চেয়ে বেশি স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ২০২০ সালে হংকংয়ে একটি জাতীয় নিরাপত্তা আইন কার্যকর করার পর থেকে সেখানকার রাজনৈতিক, আইনি এবং ব্যবসায়িক পরিস্থিতি বদলে গেছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, পানামা খালের মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি বাণিজ্যিক পথের বন্দর ব্ল্যাকরকের মতো বিদেশি একটি কোম্পানির হাতে চলে যাওয়াটা চীনের জন্য উদ্বেগের কারণ। এর মাধ্যমে হয়তো ভবিষ্যতে চীনের বাণিজ্যিক এবং অর্থনৈতিক স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

চীন মনে করে, এই ধরনের চুক্তি তাদের অর্থনীতির ওপর এক ধরনের চাপ সৃষ্টি করতে পারে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *