চীনাদের ‘কৃষক’ বললেন, সমালোচনার ঝড়!

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের সম্প্রতি করা একটি মন্তব্যকে কেন্দ্র করে চীন বেশ তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। গত সপ্তাহে ফক্স নিউজে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ভ্যান্স চীনা নাগরিকদের ‘কৃষক’ হিসেবে উল্লেখ করেন।

তার এই মন্তব্যের জেরে চীনের অভ্যন্তরে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এটি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে।

সাক্ষাৎকারে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতির পক্ষে কথা বলতে গিয়ে ভ্যান্স বলেন, “বৈশ্বিক অর্থনীতি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য কী নিয়ে এসেছে? এর উত্তর হলো, আমরা মূলত অন্য দেশগুলোতে উৎপাদিত পণ্য কেনার জন্য বিশাল পরিমাণ ঋণ নিই।” তিনি আরও যোগ করেন, “আমরা চীনা কৃষকদের কাছ থেকে ঋণ নিই, আর সেই ঋণ দিয়ে তারা যা উৎপাদন করে, তাই কিনি।”

ভ্যান্সের এমন মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লিন জিয়ান মঙ্গলবার বলেন, “ভাইস প্রেসিডেন্টের এমন অজ্ঞতাপূর্ণ এবং অসম্মানজনক মন্তব্য শোনাটা অত্যন্ত দুঃখজনক।”

চীনের ইন্টারনেট দুনিয়ায় ভ্যান্সের এই সাক্ষাৎকারের ক্লিপ ছড়িয়ে পড়তেই তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। চীনের অত্যাধুনিক প্রযুক্তি, যেমন – শিল্প রোবট, বৈদ্যুতিক গাড়ি এবং দ্রুতগতির রেলপথের প্রেক্ষাপটে অনেকেই তার এই মন্তব্যের সমালোচনা করেছেন।

চীনের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল টাইমসের সাবেক সম্পাদক হু সিজিন তার নিজস্ব ওয়েবসাইটে লিখেছেন, “গ্রামীণ আমেরিকা থেকে উঠে আসা এই ‘কৃষক’-এর সম্ভবত বাস্তবতার অভাব রয়েছে। অনেকে তাকে চীন ঘুরে আসার জন্য আহ্বান জানাচ্ছেন।”

বিষয়টি নিয়ে চীনের সামাজিক মাধ্যম উইবোতে একটি হ্যাশট্যাগ তৈরি করা হয় এবং সোমবার রাতের মধ্যে সেটি আলোচনার শীর্ষে উঠে আসে। মঙ্গলবার দুপুরের মধ্যে এই বিষয়ে ১৪ কোটির বেশি ভিউ হয়।

একজন মন্তব্যকারী লিখেছেন, “আসলে, এটাই তাদের আসল চেহারা – সবসময় তারা উদ্ধত ও রুঢ়।” আরেকজন মন্তব্য করেন, “আমরা হয়তো কৃষক, কিন্তু আমাদের আছে বিশ্বের সেরা দ্রুতগতির রেল ব্যবস্থা, শক্তিশালী সরবরাহ ব্যবস্থা, এবং অত্যাধুনিক আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই), স্ব-নিয়ন্ত্রিত গাড়ি ও ড্রোন প্রযুক্তি। এমন কৃষকরা কি খুব একটা প্রভাবশালী নয়?”

অনেক ব্যবহারকারী ভ্যান্সের নিজের জীবন সম্পর্কে লেখা একটি বইয়ের প্রসঙ্গ টেনে আনেন। ২০১৬ সালে প্রকাশিত ‘হিলbilly এলিজি’ নামক আত্মজীবনীতে তিনি দারিদ্র্য, শৈশবের নির্যাতন এবং মায়ের মাদকাসক্তির কথা উল্লেখ করেছেন।

এই বইয়ে যুক্তরাষ্ট্রের একটি পশ্চাৎপদ অঞ্চলের কথাও তুলে ধরা হয়েছে, যেখানে তিনি বেড়ে উঠেছেন।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *