চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে বোয়িং বিমানের একটি চালান ফেরত পাঠিয়েছে চীন। যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক বৃদ্ধির প্রতিক্রিয়ায় চীনও পাল্টা শুল্ক আরোপ করায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে চীনের একটি এয়ারলাইন্সের জন্য বিমান কেনা কঠিন হয়ে পড়েছে।
রবিবার, চীনের একটি এয়ারলাইন্সের জন্য তৈরি করা একটি বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স বিমান যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটলে ফিরে আসে। বিমানটি চীনের জিয়ামেন এয়ারলাইন্সের জন্য নির্ধারিত ছিল। খবর অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সময়ে চীন থেকে আমদানির ওপর শুল্ক বাড়ানো হয়েছিল, যার ফলস্বরূপ এই পদক্ষেপ।
প্রতিবেদনে প্রকাশ, বিমানটি গুয়াম এবং হাওয়াইয়ে জ্বালানি নেওয়ার পর প্রায় ৫,০০০ মাইল পথ পাড়ি দিয়ে আবার যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে আসে। এই ঘটনার কারণ হিসেবে জানা যায়, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যেকার বাণিজ্য বিরোধের জেরে শুল্কের বোঝা বৃদ্ধি।
যুক্তরাষ্ট্র চীনের আমদানি পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়ানোর পর চীনও এর জবাব দেয়। এর ফলে বোয়িং বিমান সরবরাহ ও গ্রহণ উভয় ক্ষেত্রেই জটিলতা তৈরি হয়েছে। একটি বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স বিমানের বাজার মূল্য প্রায় ৫৫ মিলিয়ন ডলার। এমন পরিস্থিতিতে চীনা এয়ারলাইন্সগুলোর জন্য বিমান কেনা বেশ কঠিন হয়ে পড়েছে।
এই ঘটনার প্রেক্ষাপটে, বেইজিং (Beijing) বর্তমানে এমন একটি পদক্ষেপের কথা ভাবছে, যার মাধ্যমে বোয়িং বিমান লিজ নেওয়া এয়ারলাইন্সগুলোকে সহায়তা করা যায়। চীনের বাজারে বিমানের চাহিদার প্রায় ২০ শতাংশ পূরণ করার সম্ভাবনা রয়েছে।
বোয়িং কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, মার্চ মাসের শেষে চীনের বিভিন্ন কোম্পানির কাছে তাদের ১৩০টি বিমান সরবরাহের চুক্তি ছিল। তবে শুল্কের কারণে সেই সরবরাহ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
বোয়িংয়ের প্রধান নির্বাহী, কেলি অার্টবার্গ (Kelly Ortberg) যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটে শুনানিতে বলেছিলেন, তার কোম্পানির প্রায় ৮০ শতাংশ বিমান বিদেশে বিক্রি হয়। তিনি এমন পরিস্থিতি এড়াতে চান যেখানে কিছু বাজার তাদের জন্য বন্ধ হয়ে যায়।
বিশ্লেষকদের মতে, শুল্কের এই পরিবর্তনের কারণে অনেক বিমানের ডেলিভারি আটকে যেতে পারে। এমনকি কিছু এয়ারলাইন্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে জানা যায়, শুল্কের কারণে তারা বিমান ডেলিভারি স্থগিত করার কথা ভাবছেন।
আয়ারল্যান্ডের একটি বাজেট এয়ারলাইন্স, রায়ানএয়ারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাইকেল ও’লিয়ারি (Michael O’Leary) জানিয়েছেন, আগস্ট মাস থেকে তারা বোয়িং থেকে ২৫টি বিমান পাওয়ার কথা ছিল, তবে পরিস্থিতি বিবেচনা করে সম্ভবত তারা তা স্থগিত করতে পারেন।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান