চীনের তেল কোম্পানিগুলো রাশিয়ার কাছ থেকে অপরিশোধিত তেল কেনার পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়িয়েছে। এর প্রধান কারণ হলো, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য শুল্কের হুমকির মুখে ভারত রাশিয়ার থেকে তেল আমদানি কমাচ্ছে।
আন্তর্জাতিক বাজার বিশ্লেষকদের মতে, অক্টোবর ও নভেম্বরে চীন অন্তত ১৫ কার্গো রুশ তেল সরবরাহ নিশ্চিত করেছে।
ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে পশ্চিমা দেশগুলো যখন রাশিয়ার তেল বর্জন করতে শুরু করে, তখন চীন ও ভারত ছিল রুশ তেলের প্রধান ক্রেতা।
তবে, এরপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, যারা রাশিয়ার তেল আমদানি করবে তাদের ওপর শুল্ক আরোপের হুমকি দেন। বিশেষ করে, ভারত যদি রাশিয়ার তেল কেনা অব্যাহত রাখে, তাহলে তাদের উপরও বাড়তি শুল্ক বসানোর ইঙ্গিত দেন তিনি।
এর ফলস্বরূপ, ভারত রাশিয়ার থেকে তেল আমদানি উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে দিয়েছে।
আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের তথ্য অনুযায়ী, অক্টোবরের জন্য চীনের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন এবং বৃহৎ বেসরকারি তেল শোধনাগারগুলো প্রায় ১৩ কার্গো এবং নভেম্বরের জন্য কমপক্ষে দুটি কার্গো পশ্চিমা রুশ তেল কেনার চুক্তি করেছে।
প্রতিটি কার্গোতে সাধারণত প্রায় ৭ থেকে ১০ লাখ ব্যারেল তেল থাকে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, চীন এই সুযোগটি কাজে লাগাচ্ছে, কারণ রাশিয়ান তেলের দাম মধ্যপ্রাচ্যের বাজারের তুলনায় প্রতি ব্যারেল অন্তত ৩ ডলার কম।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ভারতের বাজার থেকে সরে আসার কারণে চীনের জন্য এই মুহূর্তে রাশিয়ার কাছ থেকে বেশি তেল কেনার ভালো সুযোগ রয়েছে। তবে, চীন একাই ভারতের তেলের চাহিদা পূরণ করতে পারবে না।
গত বছর ভারত রাশিয়া থেকে ৫৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পেট্রোলিয়াম ও অপরিশোধিত তেল আমদানি করেছে।
বর্তমানে, রাশিয়ার তেলের সরবরাহ ভারতের বাজারের প্রায় ৩৬ শতাংশ।
অন্যদিকে, রাশিয়া থেকে চীনের অপরিশোধিত তেল আমদানির পরিমাণও বেড়েছে।
বর্তমানে, চীনের মোট অপরিশোধিত তেল আমদানির ১৩.৫ শতাংশ আসে রাশিয়া থেকে। গত বছর চীন রাশিয়া থেকে প্রায় ৬২.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের তেল আমদানি করেছে।
এই ঘটনার প্রেক্ষাপটে, বাংলাদেশের জন্য এর কিছু প্রভাব থাকতে পারে।
আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দামের এই পরিবর্তন বাংলাদেশের আমদানি ব্যয়কে প্রভাবিত করতে পারে।
যেহেতু বিশ্ববাজারে তেলের দামের ওঠানামা একটি চলমান প্রক্রিয়া, তাই বাংলাদেশের সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে হতে পারে।
এর মধ্যে বিকল্প উৎস থেকে তেল আমদানি এবং দীর্ঘমেয়াদী সরবরাহ নিশ্চিত করা অন্যতম।
তথ্য সূত্র: সিএনএন