মার্কিন শুল্ক ছাড়: চীনের প্রতিক্রিয়ায় কী?

যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে চলমান বাণিজ্য যুদ্ধের আঁচ আবারও বাড়ছে। সম্প্রতি, চীন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কিছু ইলেকট্রনিক পণ্যের ওপর শুল্ক ছাড়ের ঘোষণাকে স্বাগত জানালেও এটিকে ‘ভুল সংশোধন’-এর একটি ক্ষুদ্র পদক্ষেপ হিসেবে অভিহিত করেছে।

বেইজিংয়ের পক্ষ থেকে এই ছাড়কে যথেষ্ট নয় বলেও মন্তব্য করা হয়েছে। তাদের দাবি, দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিকভাবে আরোপিত শুল্ক সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাহার করতে হবে।

জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্র স্মার্টফোন, কম্পিউটারসহ কিছু ইলেকট্রনিক পণ্যের ওপর থেকে শুল্ক মওকুফ করেছে। তবে চীন এটিকে স্বাগত জানালেও বাণিজ্য যুদ্ধের মূল সমস্যা সমাধানে আরও পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।

চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা বিষয়টির প্রভাব মূল্যায়ন করছে।

অন্যদিকে, মার্কিন বাণিজ্য সচিব হাওয়ার্ড ল্যাটনিক সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে জানান, স্মার্টফোন, কম্পিউটার এবং অন্যান্য কিছু ইলেকট্রনিক পণ্যের ওপর আলাদা শুল্ক আরোপ করা হবে, যা সম্ভবত খুব শীঘ্রই কার্যকর হতে পারে।

এর প্রতিক্রিয়ায় চীন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, তারা যেন এই শুল্ক সম্পূর্ণভাবে বাতিল করে এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধার ভিত্তিতে পুরনো অবস্থানে ফিরে আসে।

এই ঘটনার আগে, চীনও মার্কিন পণ্যের ওপর ১২৫ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপ করে। এর ফলে বিশ্বের বৃহত্তম দুটি অর্থনীতির মধ্যে বাণিজ্য যুদ্ধ আরও তীব্র রূপ নিয়েছে।

বিশ্লেষকদের মতে, এই বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। বিনিয়োগকারীরা সরকারি বন্ড বিক্রি করে দিচ্ছে এবং ডলারের দর পতন হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি জ্যামিসন গ্রিয়ার সম্প্রতি জানিয়েছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চীন প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে কথা বলার কোনো পরিকল্পনা নেই। যদিও ট্রাম্প তার সামাজিক মাধ্যমে শুল্ক নীতি নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন, তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুল্কের কারণে উৎপাদন ব্যবস্থা দ্রুত সময়ের মধ্যে আমেরিকায় ফিরিয়ে আনা কঠিন।

এই বাণিজ্য যুদ্ধ শুধু যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। এর প্রভাব পড়ছে বিশ্বজুড়ে, যা বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য উদ্বেগের কারণ।

বাণিজ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এমন পরিস্থিতিতে আমদানি খরচ বেড়ে যেতে পারে এবং সরবরাহ শৃঙ্খলে ব্যাঘাত ঘটতে পারে, যা বাংলাদেশের অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের বাণিজ্য বিরোধের কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে, বিশেষ করে আমদানি ও রপ্তানির ক্ষেত্রে প্রভাব পড়তে পারে।

তাই, পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।

তথ্য সূত্র: আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *