মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের মধ্যে বাণিজ্য যুদ্ধ কিছুটা প্রশমিত করতে উভয় দেশই শুল্ক কমানোর বিষয়ে একটি অন্তর্বর্তীকালীন চুক্তিতে পৌঁছেছে। সুইজারল্যান্ডের জেনেভাতে দু’দিনের আলোচনা শেষে উভয় পক্ষই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর ফলে বিশ্ব বাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
চুক্তি অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র কিছু চীনা পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করবে। এই সময়ে বিদ্যমান ১০ শতাংশ শুল্ক বহাল থাকবে। চীনও একই পদক্ষেপ নেবে এবং মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক কমাবে। এই চুক্তির ফলে উভয় দেশই একে অপরের প্রতি বাণিজ্য ক্ষেত্রে আরও নমনীয় হবে।
আলোচনায় দুই দেশের প্রতিনিধিরা পারস্পরিক সম্মান বজায় রেখেছেন এবং ভবিষ্যতে বাণিজ্য সম্পর্ক আরও জোরদার করতে রাজি হয়েছেন। উভয় দেশই তাদের দ্বিপাক্ষিক অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ককে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মনে করে। তারা পারস্পরিক উন্মুক্ততা, সহযোগিতা এবং শ্রদ্ধার ভিত্তিতে কাজ করতে সম্মত হয়েছে।
এই চুক্তির অংশ হিসেবে, যুক্তরাষ্ট্র চীনের কাছ থেকে আমদানি করা বিভিন্ন পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্কের হার কমিয়ে দেবে। চীনও এর প্রতিক্রিয়া হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর আরোপিত শুল্ক স্থগিত করবে বা বাতিল করবে। উভয় দেশই বাণিজ্য এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য একটি কাঠামো তৈরি করতে রাজি হয়েছে। চীনের পক্ষে উপ-প্রধানমন্ত্রী হে লিফেং এবং যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট ও বাণিজ্য প্রতিনিধি জ্যামিসন গ্রিয়ার এই আলোচনায় নেতৃত্ব দেবেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই চুক্তির ফলে উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্য যুদ্ধের উত্তেজনা কমবে এবং বিশ্ব অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে। তবে, এই চুক্তির দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব সম্পর্কে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না। এই বিষয়ে উভয় দেশ নিয়মিত আলোচনা চালিয়ে যাবে।
যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের সঙ্গেও একটি বাণিজ্য চুক্তির কাঠামো তৈরি করেছে, যা বাণিজ্য ক্ষেত্রে তাদের পারস্পরিক সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করবে। এই ধরনের চুক্তিগুলো বিশ্ব বাণিজ্যের জন্য ইতিবাচক একটি দিক।
এই চুক্তির ফলে বাংলাদেশের বাজারেও কিছু প্রভাব পড়তে পারে। বিশেষ করে, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্যের পরিবর্তন হলে, বাংলাদেশের আমদানি ও রপ্তানিতেও তার প্রভাব পড়তে পারে। তাই, বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের এই বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে এবং বিশ্ব বাজারের গতিবিধির ওপর নজর রাখতে হবে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা