মার্কিন বাণিজ্য যুদ্ধের পথে চীন! কঠিন হুঁশিয়ারি বেইজিংয়ের

শিরোনাম: বাণিজ্য যুদ্ধে আমেরিকার সঙ্গে আপস করলে পাল্টা ব্যবস্থা নেবে চীন: বাংলাদেশের জন্য কী সম্ভাবনা?

চীন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে জানিয়েছে, বাণিজ্য যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আপস করে বেইজিংয়ের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ করলে অন্য দেশগুলোর বিরুদ্ধে তারা ‘দৃঢ় ও পাল্টা ব্যবস্থা’ নেবে।

সম্প্রতি, বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের শুল্ক ছাড়ের বিনিময়ে অন্যান্য দেশগুলোর ওপর চীনের সঙ্গে বাণিজ্য সীমিত করার জন্য চাপ সৃষ্টি করতে চাইছে।

যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে চলমান বাণিজ্য যুদ্ধ ক্রমেই বাড়ছে। উভয় দেশই একে অপরের পণ্যের ওপর উচ্চ হারে শুল্ক আরোপ করেছে।

এর ফলস্বরূপ, চীন থেকে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হওয়া পণ্যের ওপর ১৪৫ শতাংশ এবং যুক্তরাষ্ট্র থেকে চীনে রপ্তানি হওয়া পণ্যের ওপর ১২৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক ধার্য করা হয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে, চীন সরাসরি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, কোনো দেশ যদি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এমন কোনো চুক্তিতে আসে যা চীনের স্বার্থের পরিপন্থী হয়, তবে চীন চুপ করে বসে থাকবে না।

চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘চীনের স্বার্থের বিনিময়ে কোনো পক্ষের সঙ্গে চুক্তি হলে চীন তা কখনোই মেনে নেবে না।’

তারা আরও বলেছে, ‘নরম মনোভাব শান্তি আনবে না, আর আপসকেও সম্মান করা হবে না…অন্যের স্বার্থের বিনিময়ে নিজের স্বার্থ হাসিল করতে চাওয়া বাঘের চামড়া চাওয়ার মতো।’

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সময়ে নেওয়া শুল্ক নীতির কথা উল্লেখ করে আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, তিনি অন্যান্য দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি নতুন করে সাজাতে চাইছেন।

এই লক্ষ্যে তিনি বিভিন্ন দেশকে চীনের সঙ্গে বাণিজ্য কমাতে চাপ দিচ্ছেন।

তবে, যুক্তরাজ্যের পক্ষ থেকে এরই মধ্যে জানানো হয়েছে যে তারা চীনের সঙ্গে তাদের বাণিজ্যিক সম্পর্ক বজায় রাখবে।

যুক্তরাজ্যের চ্যান্সেলর রাচেল রিভস বলেছেন, ‘চীন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি এবং তাদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করাটা বোকামি হবে।’

বর্তমানে, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য যুদ্ধ অবসানের লক্ষ্যে আলোচনা চলছে বলে জানা গেছে।

ডোনাল্ড ট্রাম্পও সম্প্রতি বলেছেন, তিনি বিশ্বাস করেন যে বিশ্বের বৃহত্তম এই দুই অর্থনীতির দেশ একটি চুক্তিতে আসতে পারবে।

যদিও চীন আলোচনার কথা স্বীকার করলেও, তারা আলোচনার ক্ষেত্রে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের ওপর জোর দিয়েছে।

বেইজিং যুক্তরাষ্ট্রের ‘একতরফা নীতি’ এবং ‘সুরক্ষামূলক বাণিজ্যনীতির’ তীব্র সমালোচনা করে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে ‘শক্তির আইন’ ফিরে আসার বিষয়ে সতর্ক করেছে।

এই পরিস্থিতিতে, বাংলাদেশের জন্য কিছু সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে।

বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে বিশ্ব বাজারে সরবরাহ শৃঙ্খলে পরিবর্তন আসতে পারে।

সেক্ষেত্রে, বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা বিকল্প বাজার খুঁজে নিতে পারে এবং রপ্তানি বাড়াতে সক্ষম হতে পারে।

উদাহরণস্বরূপ, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে শুল্কের কারণে কিছু পণ্যের দাম বেড়ে গেলে, বাংলাদেশ সেই শূন্যস্থান পূরণ করতে পারে।

তবে, বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে বিশ্ব অর্থনীতির ওপর যে প্রভাব পড়বে, তার কারণে বাংলাদেশের আমদানি খরচও বাড়তে পারে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের নতুন বাজার খুঁজে বের করতে এবং বিশ্ব অর্থনীতির পরিবর্তনের সঙ্গে নিজেদের খাপ খাইয়ে নিতে প্রস্তুত থাকতে হবে।

একইসঙ্গে, বাণিজ্য নীতি এমনভাবে তৈরি করতে হবে, যাতে দেশের অর্থনীতি কোনো ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন না হয়।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *