চীনের অর্থনীতির দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে এবং মার্কিন বাণিজ্য যুদ্ধের প্রভাব মোকাবিলার জন্য একটি নতুন পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। দেশটির সরকারি সংবাদ সংস্থা শিনহুয়ার মতে, এই পরিকল্পনার মূল লক্ষ্য হলো অভ্যন্তরীণ অর্থনীতিকে শক্তিশালী করা।
কোভিড-১৯ পরিস্থিতি এবং আবাসন খাতে সংকটসহ বিভিন্ন কারণে চীনের অর্থনীতিতে যে চাপ সৃষ্টি হয়েছে, তা মোকাবিলায় এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
বৈঠকে ২০২৫ সাল নাগাদ চীনের অর্থনীতিতে ইতিবাচক পরিবর্তনের আশা প্রকাশ করা হয়েছে। তবে, আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি এবং বহিরাগত প্রভাবের কারণে উদ্ভূত সংকট মোকাবিলায় প্রস্তুতি নেওয়ার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
বাণিজ্য যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে, বেইজিং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে মিলে কাজ করার এবং একতরফা বাণিজ্য নীতির বিরোধিতা করার কথা জানিয়েছে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, চীনের সরকার কর্মসংস্থান বীমার অর্থ পরিশোধের পরিমাণ বাড়ানো, নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষের আয় বৃদ্ধি, পরিষেবা খাতের উন্নয়ন এবং ভোগ বৃদ্ধি করার মতো পদক্ষেপ নেবে।
এছাড়া, ব্যবসায়ীদের সংকটকালে সহায়তার জন্য বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এর মধ্যে আর্থিক সহায়তা বৃদ্ধি এবং অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক বাণিজ্যের মধ্যে সমন্বয় সাধনের বিষয়গুলোও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
আলোচনায় আরও উঠে এসেছে, চীনের আবাসন খাতে নতুন মডেল তৈরি করা, শহরের উন্নয়ন কর্মসূচি গ্রহণ এবং অবকাঠামোগত উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার প্রয়োজনীয়তার কথা।
একইসঙ্গে, শোনা যাচ্ছে যে চীন সরকার সম্ভবত কিছু মার্কিন পণ্যের ওপর থেকে শুল্ক কমানোর কথা বিবেচনা করছে, যার মধ্যে সেমিকন্ডাক্টরও রয়েছে।
বর্তমানে, চীন সরকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ১২৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করে রেখেছে। তবে, নির্ভরযোগ্য সূত্রে খবর পাওয়া যাচ্ছে যে, কিছু পণ্যের শুল্ক কমানোর বিষয়ে আলোচনা চলছে।
এর প্রতিক্রিয়ায়, যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি বলেছেন, উভয় পক্ষই শুল্ক পর্যালোচনা করছে এবং ছাড়ের তালিকা তৈরি করতে শুরু করেছে।
এই বাণিজ্য যুদ্ধ উভয় দেশের অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। এমন পরিস্থিতিতে শুল্ক ছাড়ের বিষয়টি উভয়পক্ষের মধ্যে কিছুটা হলেও সমঝোতার ইঙ্গিত বহন করে।
ইতোমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র চীন থেকে আমদানিকৃত কিছু পণ্যের ওপর শুল্ক মওকুফ করেছে। তবে, বাণিজ্য যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে আলোচনা চলছে কিনা, তা নিয়ে এখনো ভিন্ন মত রয়েছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন যে, তিনি চীনের সঙ্গে শুল্ক নিয়ে আলোচনা করছেন। যদিও চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানাচ্ছে, তাদের মধ্যে কোনো আলোচনা হচ্ছে না।
এই ঘটনার প্রভাব বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কেমন হবে, সে বিষয়ে এখনই নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না।
তবে, বিশ্ব অর্থনীতির এই গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের দিকে আমাদের তীক্ষ্ণ নজর রাখতে হবে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান