আতঙ্ক! কোভিড-১৯: সত্য প্রকাশ করায় সাংবাদিকের ৪ বছরের জেল!

চীনের একজন সাংবাদিক, যিনি কোভিড-১৯ মহামারীর প্রাদুর্ভাবের প্রাথমিক পর্যায়ে খবর সংগ্রহ করেছিলেন, তাকে আরও চার বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম স্বাধীনতা সংস্থা, রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস (আরএসএফ) এই তথ্য জানিয়েছে।

৪২ বছর বয়সী ঝাং ঝানকে চীনের আদালতে ‘বিবাদ সৃষ্টি ও উস্কানি’র অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।

ডিসেম্বর ২০২০ সালে, চীনের উহান শহর থেকে করোনার প্রাদুর্ভাবের প্রথম দিকের ঘটনাগুলো সরাসরি তুলে ধরার কারণে ঝাংকে চার বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। আরএসএফের মতে, এই নতুন রায়টি মূলত সাংবাদিকতার কণ্ঠরোধ করার একটি প্রচেষ্টা।

সংস্থাটি বলেছে, ঝাং ঝানকে ‘তথ্য যোদ্ধা’ হিসেবে বিশ্বজুড়ে সম্মানিত করা উচিত, কিন্তু তাকে নিষ্ঠুর কারাগারে বন্দী করে রাখা হয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবিলম্বে তার মুক্তির জন্য বেইজিংয়ের ওপর চাপ প্রয়োগ করার আহ্বান জানানো হয়েছে।

ঝাং ঝান উহানের হাসপাতাল ও জনশূন্য রাস্তাঘাটের ছবি এবং ভিডিওসহ বিভিন্ন ঘটনার বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেছিলেন। তার এই কাজ সরকারি বর্ণনার থেকে ভিন্ন ছিল। তার আইনজীবী রেন কোয়াননিউ জানিয়েছেন, ঝাং মনে করেন, তিনি তার মত প্রকাশের স্বাধীনতার কারণে নির্যাতিত হচ্ছেন।

জানা গেছে, গ্রেফতারের পর তিনি অনশন শুরু করেন এবং পুলিশ তাকে জোর করে খাওয়াতে বাধ্য করে।

আরএসএফ জানিয়েছে, ঝাং-কে মে মাসে মুক্তি দেওয়া হলেও তিন মাস পর আবার আটক করা হয়। এরপর সাংহাইয়ের পুডং ডিটেনশন সেন্টারে তাকে রাখা হয়। ঝাং-এর আগের আইনজীবী রেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানিয়েছেন, নতুন অভিযোগগুলি ঝাং-এর বিদেশি ওয়েবসাইটগুলোতে মন্তব্য করার ফল। এই কারণে তাকে দোষী সাব্যস্ত করা উচিত নয়।

নিউ ইয়র্ক ভিত্তিক কমিটি টু প্রোটেক্ট জার্নালিস্টস-এর (সিপিজে) এশিয়া-প্যাসিফিক পরিচালক বেহ লিহ ই বলেছেন, “সাংবাদিকতার জন্য ঝাং-এর ওপর ভিত্তিহীন অভিযোগের মাধ্যমে নির্যাতন চালানো হচ্ছে। চীনা কর্তৃপক্ষকে অবিলম্বে ঝাংকে মুক্তি দিতে হবে।

আরএসএফের তথ্য অনুযায়ী, চীন বিশ্বে সাংবাদিকদের বন্দী করার ক্ষেত্রে শীর্ষ স্থানে রয়েছে। বর্তমানে অন্তত ১২৪ জন গণমাধ্যম কর্মী দেশটির কারাগারে বন্দী রয়েছেন। ২০২৩ সালের বিশ্ব প্রেস ফ্রিডম ইনডেক্সে ১৮০টি দেশের মধ্যে চীনের অবস্থান ছিল ১৭৮তম।

উল্লেখ্য, ঝাং-এর এই কারাদণ্ডের এক সপ্তাহ আগে, চীনের আইনপ্রণেতারা জনসাধারণের স্বাস্থ্য বিষয়ক জরুরি অবস্থার প্রতিক্রিয়া দ্রুত করার জন্য একটি বিল পাস করেছেন। এই বিলে সাধারণ মানুষকে জরুরি অবস্থা সম্পর্কে সরাসরি সরকারের কাছে তথ্য জানানোর সুযোগ দেওয়া হয়েছে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *