আলো ঝলমলে দুনিয়ায়, যেখানে অভিনেতা-অভিনেত্রীদের অভিনয় দক্ষতা দর্শকদের মন জয় করে, সেখানে এমন কিছু মানুষের গল্প রয়েছে, যারা ক্যামেরার সামনে নিজেদের ছবি দিয়েই জয় করেছেন দর্শক হৃদয়।
তাদের কেউই হয়তো অভিনেতা নন, কিন্তু তাদের ছবিগুলো সিনেমার পর্দায় জীবন্ত হয়ে উঠেছে, যা তাদের জীবনে এনেছে অপ্রত্যাশিত অভিজ্ঞতা।
এমনই একজন হলেন এমিলিয়া হলিডে।
কৈশোরে (Adolescence) নামক একটি সিনেমায় তিনি ‘কেটি’ নামের এক নিহত কিশোরীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন, তবে সরাসরি নয়, বরং কয়েকটি স্থিরচিত্রের মাধ্যমে।
১৪ বছর বয়সী হলিডে’র মুখচ্ছবি ছিল সেই সিনেমার প্রধান আকর্ষণগুলোর একটি।
সিনেমায় তার ছবিগুলো দেখে তার মা বেশ অবাক হয়েছিলেন, কারণ ছবিগুলো ছিল অনেক আগের তোলা।
হলিডে নিজেও স্কুলের বন্ধুদের কাছ থেকে ছবি তোলার আবদার পেয়েছিলেন।
অন্যদিকে, ‘লাভ অ্যাকচুয়ালি’ (Love Actually) ছবিতে ‘ড্যানিয়েলের মৃত স্ত্রী’ চরিত্রে অভিনয় করেছেন ৬৩ বছর বয়সী লেখক রেবেকা ফ্রেইন।
এই ছবিতে তার ব্যক্তিগত জীবনের ছবি ব্যবহার করা হয়েছিল।
ফ্রেইন জানান, পরিচালক রিচার্ড কার্টিসের বন্ধু হওয়ায় তিনি এই চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পান।
সিনেমার একটি দৃশ্যে তার বিয়ের ছবি এবং সন্তান জন্ম দেওয়ার মুহূর্তের ছবি ব্যবহার করা হয়, যা ফ্রেইনের জন্য ছিল বেশ অপ্রত্যাশিত।
এমনকি, ছবিটি মুক্তির পর অনেকে তাকে রাস্তায় দেখে চিনতে পেরেছিলেন।
জমাল ক্রিকশ্যাঙ্ক ছিলেন ‘দ্য হোল্ডওভার্স’ (The Holdovers) ছবিতে ‘কার্টিস ল্যাম্ব’-এর ভূমিকায়।
সিনেমাটির শুরুতে কার্টিসের মৃত্যু হয়, তাই ক্রিকশ্যাঙ্ককে সামরিক পোশাকে কিছু ছবি তোলার জন্য নেওয়া হয়।
২১ বছর বয়সী ক্রিকশ্যাঙ্ক জানান, তার নিজের একটি ট্রেলার ছিল, যা তার কাছে দারুণ লেগেছিল।
সিনেমাটি মুক্তি পাওয়ার পর তিনি বন্ধুদের সঙ্গে সিনেমা হলে যান এবং সেখানে উপস্থিত দর্শকদের কাছ থেকে ছবি তোলার জন্য অনুরোধ পান।
প্রযোজনা ডিজাইনার অ্যাডাম রোওয়ের ছবিও বিভিন্ন টিভি শো-তে ব্যবহৃত হয়েছে, যেমন ‘দ্য গুড প্লেস’ (The Good Place) এবং ‘ক্রিমিনাল মাইন্ডস’ (Criminal Minds)।
এইসব ছবিতে তার ছবিগুলো অফিসের দেয়াল অথবা স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে দেখা যায়।
রোওয়ের মতে, এই ধরনের কাজগুলো বেশ মজাদার, কারণ দর্শকদের প্রতিক্রিয়া সবসময়ই অপ্রত্যাশিত হয়।
এসব গল্প প্রমাণ করে, অভিনয়ের বাইরেও, ক্যামেরার পেছনের মানুষেরাও কিভাবে চলচ্চিত্রের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠতে পারেন।
তাদের অভিজ্ঞতাগুলো একদিকে যেমন আনন্দদায়ক, তেমনই অপ্রত্যাশিত।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান