অভিনেত্রী ক্রিস্টিনা রিচ্চি: সৌন্দর্যের সংজ্ঞা বদলে আত্মবিশ্বাসের পথে বর্তমান সমাজে সৌন্দর্যের ধারণা নিয়ে প্রতিনিয়ত চলে আসা সমালোচনার মাঝে, অভিনেত্রী ক্রিস্টিনা রিচ্চি এক ভিন্ন পথের দিশা দেখিয়েছেন।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, নিজের সৌন্দর্যকে অন্যের চোখে বিচার করার পরিবর্তে আত্ম-অনুভূতির উপর জোর দেওয়া উচিত। তাঁর মতে, একজন মানুষের আসল পরিচয় লুকিয়ে থাকে তার আত্মবিশ্বাসের গভীরে, বাহ্যিক রূপের মোহে নয়।
পিপল ম্যাগাজিনকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে ৪৫ বছর বয়সী এই অভিনেত্রী জানান, “আমি মনে করি, কারো চোখে আমি সুন্দরী কি না, সেটা কোনো বিষয় নয়। আমি যেমন, তেমনই আছি। আমি নিজেকে একটি মুখ এবং একটি মস্তিষ্ক হিসেবে দেখি।
আমার শরীর নিয়ে আমি ভাবি না। অন্যেরা আমার সম্পর্কে কী ভাবে, সে বিষয়েও আমার কোনো চিন্তা নেই।”
রিচ্চি তাঁর ৩ বছর বয়সী মেয়ে ক্লিও’র কথা উল্লেখ করে বলেন, মেয়ে তাঁকে শিখিয়েছে, বাইরের রূপের থেকে আসল পরিচয় আলাদা।
ক্লিও’কে সুন্দর বললে সে উত্তর দেয়, “আমি সুন্দর নই, আমি ক্লিও।” রিচ্চি মনে করেন, এই ধারণা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একজন মানুষ হিসেবে আমাদের আত্মপরিচয় তৈরি করতে বাইরের কোনো কিছুর প্রয়োজন নেই।
নিজের সন্তানদের আত্মবিশ্বাসী করে তোলার জন্য কী ধরনের চেষ্টা করেন, সে বিষয়েও কথা বলেন ক্রিস্টিনা। তিনি বলেন, “আমি সবসময় বলি, ক্লিও কতটা শক্তিশালী, সে কতটা চেষ্টা করে, সে কতটা বুদ্ধিমান এবং মজার—এসব বিষয়গুলোই একজন মানুষের আসল পরিচয় তৈরি করে।”
তাঁর মতে, নারীদের দুর্বল করার জন্য সবচেয়ে বড় কৌশল হলো, তাঁদের বাইরের রূপে আটকে রাখা, যাতে তাঁরা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো থেকে দূরে থাকেন।
ছোটবেলায় অভিনয় জগতে প্রবেশের পর কীভাবে শরীরের গঠন নিয়ে সমালোচনার শিকার হয়েছিলেন, সেই অভিজ্ঞতাও তিনি তুলে ধরেন। তাঁর কথায়, পোশাক নির্বাচনের সময় তিনি সবচেয়ে বেশি অস্বস্তি বোধ করতেন, কারণ সবাই তাঁর শারীরিক গঠন নিয়ে আলোচনা করত এবং তাঁকে আরও “নারী-সুলভ” দেখাতে চেষ্টা করত।
এই বিষয়টি তাঁর ভালো লাগত না।
অতীতে নিজের শরীর নিয়ে এক ধরনের মানসিক সমস্যার শিকার হয়েছিলেন রিচ্চি। তাই তিনি এখন চেষ্টা করেন, তাঁর সন্তানদের খাবার এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের প্রতি সঠিক ধারণা দিতে।
তাঁর মতে, খাবার খাওয়া উচিত শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টির জন্য, স্বাস্থ্যকরভাবে বেড়ে ওঠার জন্য।
ক্রিস্টিনা রিচ্চির এই আত্ম-উপলব্ধি আমাদের সমাজের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করে। সৌন্দর্যকে একটি নির্দিষ্ট কাঠামোর মধ্যে আবদ্ধ না করে, নিজের ভেতরের শক্তিকে খুঁজে বের করার গুরুত্ব তিনি তুলে ধরেছেন।
তাঁর এই পথচলা, অন্যদেরও আত্ম-অনুসন্ধানে উৎসাহিত করবে, যা বর্তমান সমাজে খুবই প্রয়োজনীয়।
তথ্য সূত্র: পিপল ম্যাগাজিন।