ক্রিস্টেন স্টুয়ার্টের পরিচালনায় আত্মপ্রকাশ, ‘দ্য ক্রনোলজি অফ ওয়াটার’, দর্শকদের মন ছুঁয়ে যাওয়া এক ছবি। লিডিয়া ইউকনাভিচের ২০১১ সালের আত্মজৈবনিক উপন্যাস অবলম্বনে তৈরি এই চলচ্চিত্রটি, একজন নারীর জীবনের গভীর ক্ষত এবং তা থেকে মুক্তির এক অসাধারণ আখ্যান।
ছবিতে অভিনেত্রী হিসেবে পরিচিত ক্রিস্টেন স্টুয়ার্টের পরিচালকের আসনে আত্মপ্রকাশ নিঃসন্দেহে একটি বড় আকর্ষণ।
ছবিটি মূলত লিডিয়া নামের এক নারীর জীবনের গল্প বলে, যিনি শৈশবে বাবার দ্বারা যৌন নির্যাতনের শিকার হন। এই আঘাত তার জীবনে গভীর প্রভাব ফেলে।
সম্পর্কের টানাপোড়েন, মাদকাসক্তি, এবং আত্ম-অনুসন্ধানের এক জটিল আবর্তে ঘুরপাক খেতে থাকে তার জীবন। অতীতের স্মৃতি আর বর্তমানের কঠিন বাস্তবতাকে ক্যামেরার ক্যানভাসে ফুটিয়ে তুলেছেন পরিচালক।
অভিনেত্রী ইমোজেন পুটস-এর সাবলীল অভিনয়ে লিডিয়ার চরিত্রে গভীরতা যোগ হয়েছে। বাবার চরিত্রে মাইকেল এপ, বোনের চরিত্রে থোরা বার্চ এবং লিডিয়ার প্রেমিকের চরিত্রে আর্ল কেভ-এর অভিনয়ও প্রশংসার দাবিদার।
এছাড়া, লেখক ও শিল্পী কেন কিসির চরিত্রে জিম বেলুশির উপস্থিতি ছবিতে ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে।
ছবিতে জলের একটি বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। লিডিয়া সাঁতারের প্রতি আকৃষ্ট হয়, যা তাকে মানসিক শান্তির দিকে নিয়ে যায়।
সাঁতার যেন তার কাছে এক ধরনের মুক্তি। জলের গভীরতায় সে খুঁজে ফেরে তার আত্মপরিচয়ের ঠিকানা।
ছবিটি নির্মাণে ক্রিস্টেন স্টুয়ার্টের মুন্সিয়ানা চোখে পড়ার মতো। তিনি বিষয়টিকে এমনভাবে উপস্থাপন করেছেন, যা দর্শকদের সহানুভূতি আকর্ষণ করে।
তবে কিছু ক্ষেত্রে, ছবির গতি কিছুটা ধীর মনে হতে পারে। তা সত্ত্বেও, ট্রমা থেকে মুক্তি এবং জীবনের নতুন দিক খুঁজে পাওয়ার গল্প দর্শকদের আলোড়িত করবে।
যারা ক্রিস্টেন স্টুয়ার্টের কাজের ভক্ত, তাদের জন্য এই ছবিটি একটি ভিন্ন অভিজ্ঞতা। একইসঙ্গে, যারা মানসিক স্বাস্থ্য এবং জীবনের গভীরতা নিয়ে নির্মিত সিনেমা দেখতে ভালোবাসেন, তাদেরও ভালো লাগবে এই ছবি।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান