নিউ ইয়র্ক সিটি’র একটি বিখ্যাত ব্যাপটিস্ট চার্চের প্রধান হিসেবে এক নারীর আবেদন প্রত্যাখ্যান করার পর, তার দায়ের করা লিঙ্গ বৈষম্যের মামলা খারিজ করে দিয়েছেন একজন মার্কিন ফেডারেল বিচারক। এই ঘটনা যুক্তরাষ্ট্রে নারী অধিকার এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে তাদের ভূমিকা নিয়ে চলমান বিতর্কের একটি দৃষ্টান্ত।
আবিসিনিয়ান ব্যাপটিস্ট চার্চ, যা ১৮০৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, নিউ ইয়র্ক শহরের হারলেমে অবস্থিত একটি প্রভাবশালী চার্চ। রেভারেন্ড ইবনি মার্শাল টারম্যান, যিনি ইয়েল ডিভিনিটি স্কুলের অধ্যাপক এবং চার্চের প্রাক্তন সহকারী পাষ্টর ছিলেন, তিনি চার্চের প্রধান পাষ্টরের পদ পাওয়ার জন্য আবেদন করেছিলেন। কিন্তু তাকে নির্বাচিত করা হয়নি।
এরপর তিনি চার্চ এবং নির্বাচন কমিটির বিরুদ্ধে লিঙ্গ বৈষম্যের অভিযোগ এনে আদালতে মামলা করেন।
মামলার শুনানিতে বিচারক ডেল হো ধর্মীয় সংস্থাগুলোকে পুরোহিত নিয়োগ ও অপসারণের ক্ষেত্রে কিছু সুরক্ষা প্রদান করে এমন একটি আইনি ধারণা, “মিনিস্টেরিয়াল এক্সেপশন”-এর উল্লেখ করেন। বিচারক আরও বলেন, মার্শাল টারম্যান নির্বাচিত পাঁচজন পুরুষের চেয়ে বেশি যোগ্য ছিলেন, এমন কোনো জোরালো প্রমাণ তিনি পেশ করতে পারেননি।
আদালতের এই রায়ের প্রতিক্রিয়ায়, রেভারেন্ড টারম্যান জানান, তিনি আপিল করার কথা বিবেচনা করছেন। তিনি আবিসিনিয়ান ব্যাপটিস্ট চার্চকে ভণ্ডামি’তে নিমজ্জিত বলে মন্তব্য করেন। টারম্যানের মতে, এই মামলাটি মূলত ধর্মীয় ব্যতিক্রমের ওপর ভিত্তি করে খারিজ করা হয়েছে, যা চার্চকে বৈষম্য করার অধিকার দেয়।
তিনি আরও বলেন, বাইবেলে যদিও বলা আছে, ‘খ্রিস্টে নারী ও পুরুষ ভেদাভেদ নেই’, তবুও তার প্রতি এই বৈষম্য ছিল নিন্দনীয়।
অন্যদিকে, আবিসিনিয়ান ব্যাপটিস্ট চার্চ তাদের নির্বাচন প্রক্রিয়াকে সমর্থন করে এবং বিচারকের রায়কে স্বাগত জানায়। তারা এক বিবৃতিতে জানায়, তারা ধর্মীয় নেতৃত্বে নারী-পুরুষের সমতাকে সমর্থন করে এবং সামাজিক ন্যায়বিচার ও সকলের জন্য সমানাধিকারের পক্ষে তাদের দীর্ঘদিনের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে।
নতুন প্রধান পাষ্টর হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন কেভিন আর. জনসন। তবে নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে অসন্তুষ্ট হয়ে চার্চের কয়েকজন সদস্যও আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। তাদের অভিযোগ, নির্বাচনের কিছু নিয়মকানুন চার্চের নিজস্ব বিধি-নিষেধ লঙ্ঘন করেছে।
বর্তমানে সেই মামলাটি বিচারাধীন রয়েছে।
আবিসিনিয়ান ব্যাপটিস্ট চার্চ দীর্ঘদিন ধরে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের আশ্রয়স্থল হিসেবে পরিচিত। এই চার্চের প্রাক্তন পাষ্টর রেভারেন্ড অ্যাডাম ক্লেটন পাওয়েল জুনিয়র-এর রাজনৈতিক উত্থান বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
তিনি ১৯৩৭ থেকে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত চার্চের পাষ্টর ছিলেন এবং ২৬ বছর ধরে কংগ্রেসে দায়িত্ব পালন করেছেন।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস