যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ-এর উপ-পরিচালকের ছেলের মৃত্যু হয়েছে ইউক্রেনে, রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধ করতে গিয়ে।
রুশ সংবাদমাধ্যমের অনুসন্ধানে জানা গেছে, মাইকেল আলেকজান্ডার গ্লস নামের এক ২১ বছর বয়সী মার্কিন নাগরিক, যিনি ছিলেন সিআইএ-এর ডিজিটাল ইনোভেশন বিষয়ক উপ-পরিচালক জুলিও গ্যালিনার ছেলে।
চলতি বছরের ৪ এপ্রিল পূর্ব ইউক্রেনে তার মৃত্যু হয়।
জানা গেছে, গ্লস ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে রাশিয়ার সেনাবাহিনীর সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হন এবং ডিসেম্বরে তাকে যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠানো হয়।
পরিবার সূত্রে প্রকাশিত শোকবার্তায় ‘পূর্ব ইউরোপে’ তার মৃত্যুর কথা উল্লেখ করা হলেও, রাশিয়া বা ইউক্রেন প্রসঙ্গ এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে।
অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, কীভাবে একজন মার্কিন নাগরিক, যিনি একসময় যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি তীব্র বিদ্বেষ পোষণ করতেন, রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধে যোগ দিলেন।
গ্লসের পরিবার সূত্রে জানা যায়, তিনি ছিলেন একজন প্রতিবাদী ও পরিবেশবাদী।
তিনি বিভিন্ন সময়ে বামপন্থী আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন এবং তুরস্কের ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্যার্থে সেখানে গিয়েছিলেন।
সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ‘ভিকন্টাক্টে’ (VKontakte)-এ গ্লস নিজেকে ‘বহু মেরুর বিশ্বের সমর্থক’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
তিনি আরও লেখেন, ‘আমি ঘর থেকে পালিয়েছি, বিশ্ব ভ্রমণ করেছি।
আমি ফ্যাসিবাদকে ঘৃণা করি এবং আমার জন্মভূমিকে ভালোবাসি।’ সেখানে তিনি রাশিয়া ও ফিলিস্তিনের পতাকাও পোস্ট করেন।
অনুসন্ধানকারী ওয়েবসাইট ‘আইস্টোরিজ’-এর তথ্য অনুযায়ী, গ্লস ছিলেন ১৫০০ জনের বেশি বিদেশির মধ্যে একজন, যারা ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারির পর থেকে রুশ সেনাবাহিনীর সঙ্গে চুক্তি করেছেন।
জানা যায়, রুশ কর্তৃপক্ষের কাছে রাশিয়ার পাসপোর্ট পাওয়ার উদ্দেশ্যে তিনি এই কাজ করেছিলেন।
গ্লসের পরিচিতরা জানিয়েছেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতি, বিশেষ করে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন ইস্যুতে দেশটির ভূমিকার ঘোর বিরোধী ছিলেন।
তুরস্ক থেকে রাশিয়ায় যাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে তার যুদ্ধ করতে ইচ্ছে করে।
গ্লসের মৃত্যুর কারণ এখনো স্পষ্ট নয়।
তবে তার এক বন্ধু জানিয়েছেন, রুশ সরকার পরিবারকে মৃত্যুর খবর জানালেও বিস্তারিত কিছু জানায়নি।
ওই বন্ধু আরও জানান, ‘তারা শুধু জানিয়েছে, গ্লসের মৃত্যু ইউক্রেনের অভ্যন্তরে হয়েছে।
তিনি যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন কিনা, সে বিষয়ে কোনো তথ্য তারা দেয়নি।’
ধারণা করা হচ্ছে, রাশিয়ার সামরিক বাহিনী গ্লসের বিষয়ে কোনো ব্যাকগ্রাউন্ড চেক করেনি অথবা তার মায়ের পরিচয় সম্পর্কে অবগত ছিল না।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান