বেসবল বিশ্বে এক উজ্জ্বল নক্ষত্রের বিদায়। লস অ্যাঞ্জেলেস ডজার্সের কিংবদন্তি খেলোয়াড় ক্লেটন কার্শ’র ১৮ বছরের বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারের সমাপ্তি ঘটল। খেলোয়াড় জীবনে সাফল্যের চূড়ায় থাকা এই তারকা খেলোয়াড় সম্প্রতি মেজর লীগ বেসবলের (এমএলবি) ইতিহাসে নিজের নাম স্বর্ণাক্ষরে লিখিয়েছেন।
ডজার্স টানা দ্বিতীয়বারের মতো ওয়ার্ল্ড সিরিজ জেতার পরেই তিনি এই ঘোষণা দেন।
খেলা শেষের পর কার্শ’র প্রতিক্রিয়া ছিল বেশ মজার। বুলেপেনে ওয়ার্ম আপ করার সময় তিনি খেলার ফল খেয়াল করেননি। যখন খেলা শেষ হয়, তখন তিনি এতটাই মনোযোগী ছিলেন যে, খেলা শেষ হয়ে যাওয়ার খবরটি প্রথমে তাঁর কাছে পৌঁছায়নি।
সতীর্থ জশ বার্ড তাকে জানান, তাঁরা বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন।
৩৭ বছর বয়সী এই খেলোয়াড়, যিনি মূলত একজন বাঁহাতি পিচার হিসেবে পরিচিত, সেপ্টেম্বরেই অবসর নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। খেলোয়াড়ি জীবন শেষে তিনি বলেন, এর চেয়ে ভালো কিছু হতে পারত না।
ডজার্সের হয়ে খেলা তাঁর কাছে ছিল সম্মানের। তিনি তিনটি ওয়ার্ল্ড সিরিজ জিতেছেন এবং তাঁর সময়ে অন্যতম সেরা খেলোয়াড় হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।
এটা কোনো দুঃখের অনুভূতি নয়। বরং, দারুণ লাগছে। আমি সারা জীবন বলতে পারব, আমি আমার শেষ খেলায় ওয়ার্ল্ড সিরিজ জিতেছি। এর চেয়ে ভালো কিছু হতে পারে না।
কার্শ তাঁর অসাধারণ দক্ষতা এবং নিবেদন দিয়ে সকলের মন জয় করেছেন। তাঁর বল করার ধরন ছিল খুবই আকর্ষণীয়। তিনি তাঁর প্রজন্মের অন্যতম সেরা পিচার হিসেবে পরিচিত।
তাঁর সাফল্যের মুকুটে যুক্ত হয়েছে তিনটি সাই ইয়ং অ্যাওয়ার্ড। এই পুরস্কারটি এমএলবি-তে সেরা পিচারকে দেওয়া হয়।
২০০৪ সাল থেকে ডজার্সের হয়ে খেলা কার্শ এর আগে ২০১৩ সালে দলটির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হন। তাঁর দল ২০১৫ সালে সবচেয়ে বেশি জয়লাভ করে। ২০১২ সালে তিনি প্রথম প্লেয়ার হিসেবে এক মৌসুমে ৩০০ স্ট্রাইক আউট করেন।
তাঁর অসাধারণ পারফরম্যান্সের কারণে সতীর্থ এবং সমর্থকদের মধ্যে তিনি সবসময় প্রিয় ছিলেন।
ক্যারিয়ারের পরিসংখ্যানেও কার্শ অনন্য। তাঁর ক্যারিয়ারের রেকর্ড ২২-৯৬, যেখানে ১৫টি শাটআউট রয়েছে। তাঁর ইআরএ (ERA) বা রান-এভারেজ ছিল ২.৫৪, যা ১৯২০ সালের পর থেকে লাইভ-বল যুগে খেলা যেকোনো পিচারের মধ্যে সবচেয়ে কম।
অবসরের পর ডজার্সের প্রেসিডেন্ট অব বেসবল অপারেশনস অ্যান্ড্রু ফ্রিডম্যান কার্শকে দলের সঙ্গে যুক্ত থাকার প্রস্তাব দিয়েছেন। কার্শ বলেছেন, তিনি ভবিষ্যতে দলের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী।
নিঃসন্দেহে, বেসবল বিশ্বে ক্লেটন কার্শ’র অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস