বিশ্বজুড়ে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে কমেডিয়ানদের অভিনব কৌশল।
বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির ফলে সারা বিশ্বে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব এখন সুস্পষ্ট। বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি—এসবের শিকার হচ্ছে বাংলাদেশসহ বিশ্বের অনেক দেশ।
এমন পরিস্থিতিতে, জলবায়ু পরিবর্তন ও এর প্রতিকার নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে কমেডিয়ানরা এক ভিন্নধর্মী পথ বেছে নিচ্ছেন।
তারা তাদের কৌতুক পরিবেশনার মাধ্যমে এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টিকে মানুষের কাছে আরও সহজভাবে তুলে ধরছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার বারব্যাঙ্ক শহরের ফ্ল্যাপার্স কমেডি ক্লাবে প্রায়ই ‘স্ট্যান্ড আপ ফর ক্লাইমেট’ নামে একটি কমেডি শো অনুষ্ঠিত হয়।
যেখানে কমেডিয়ানরা জলবায়ু পরিবর্তনের বিভিন্ন দিক নিয়ে হাসির মাধ্যমে আলোচনা করেন।
কমেডিয়ান এস্তেবন গ্যাস্ট, যিনি ব্যক্তিগত কার্বন ফুটপ্রিন্ট হিসাব করার অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছিলেন, দর্শকদের হাসির মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনের গুরুত্ব বুঝিয়েছেন।
তিনি উদাহরণ দিয়ে বুঝিয়েছেন কীভাবে বিভিন্ন কোম্পানি জলবায়ু পরিবর্তনের দায় থেকে মুক্তি পাওয়ার চেষ্টা করে।
শুধু মঞ্চে নয়, অনলাইনেও কমেডিয়ানরা তাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
র্যাশেদা ক্রকেট-এর ‘মাইট কুড’ নামের ইউটিউব সিরিজে পরিবেশবান্ধব খাবার ও জীবনযাত্রার গুরুত্ব তুলে ধরা হয়।
তিনি হাস্যরসের মাধ্যমে পরিবেশ সচেতনতা বাড়াতে চান, বিশেষ করে কৃষ্ণাঙ্গ ও অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নিয়ে কথা বলেন।
কমেডিয়ান ব্র্যাড আইনস্টাইন, যিনি ন্যাশনাল পার্ক সার্ভিসের শিল্পী-আবাসিক ছিলেন, বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে সরকারের পদক্ষেপ নিয়ে হাস্যকর ভিডিও তৈরি করেন।
এই ধরনের কমেডি পরিবেশনার মূল উদ্দেশ্য হলো, জলবায়ু পরিবর্তনের মতো কঠিন বিষয়কে মানুষের কাছে আরও সহজবোধ্য করে তোলা।
কৌতুক ব্যবহার করে উদ্বেগকে কমানো এবং সচেতনতা বৃদ্ধি করা সম্ভব।
গবেষণায় দেখা গেছে, কমেডি মানুষকে তথ্য মনে রাখতে এবং তা অন্যদের সঙ্গে শেয়ার করতে উৎসাহিত করে।
ইউনিভার্সিটি অফ কলোরাডো, বোল্ডারে দীর্ঘ ১৩ বছর ধরে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে একটি বিশেষ কোর্স করানো হয়।
যেখানে শিক্ষার্থীরা কমেডির মাধ্যমে জলবায়ু বিষয়ক তথ্য পরিবেশন করতে শেখে।
এই কোর্সের অধ্যাপকগণ দেখেছেন, কমেডি মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে, উদ্বেগ কমাতে এবং ইতিবাচক মানসিকতা তৈরি করতে সহায়ক।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় কমেডির এই অভিনব কৌশল একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
এর মাধ্যমে সাধারণ মানুষ, নীতিনির্ধারক এবং বিজ্ঞানীদের মধ্যে একটি যোগসূত্র তৈরি করা সম্ভব।
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় কমেডি শুধু সচেতনতা বাড়ায় না, বরং আশার আলোও দেখায়।
তথ্য সূত্র: