গরম সমুদ্রের ঢেউ মোকাবিলায় ক্লাউনফিশদের শরীর ছোট হয়ে আসছে, বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সমুদ্রের তাপমাত্রা বাড়ছে, আর এর ফলে মাছেরা নিজেদের টিকিয়ে রাখতে এই কৌশল অবলম্বন করছে।
বিজ্ঞানীরা পাপুয়া নিউ গিনির উপকূলের কাছে থাকা ক্লাউনফিশদের উপর গবেষণা করে এই তথ্য পেয়েছেন।
গবেষণায় দেখা গেছে, সমুদ্রের তাপমাত্রা বৃদ্ধির সময় কিছু ক্লাউনফিশের আকার ছোট হয়ে যায়।
গবেষকরা লক্ষ্য করেছেন, আকারে ছোট হওয়া মাছগুলোর বাঁচার সম্ভাবনা বেশি ছিল।
বোস্টন ইউনিভার্সিটির গবেষক, মরগান বেনেট-স্মিথ এই বিষয়ে বলেন, “আমরা যখন প্রথম দেখলাম যে তারা ছোট হচ্ছে, তখন সত্যিই খুব অবাক হয়েছিলাম।”
এই গবেষণা ‘সায়েন্স অ্যাডভান্সেস’ জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।
গবেষকরা বলছেন, ক্লাউনফিশ কীভাবে ছোট হচ্ছে, তা এখনো স্পষ্ট নয়।
তাদের ধারণা, মাছেরা হয়তো তাদের হাড়ের কিছু অংশ পুনরায় শোষণ করছে।
সম্ভবত, ছোট আকারের কারণে মাছগুলোর খাদ্যের চাহিদাও কমে যায়, যা তাদের জন্য উপকারী।
এমনকি, কিছু ক্লাউনফিশ প্রজননকারী জুটি তাদের আকার পরিবর্তনের মধ্যে সমন্বয় সাধন করে, যাতে তাদের বাঁচার সম্ভাবনা বাড়ে।
স্ত্রী মাছেরা তাদের সঙ্গীর থেকে আকারে বড় থাকে, যা সামাজিক কাঠামো বজায় রাখতে সাহায্য করে।
গবেষকরা আরও জানিয়েছেন, ক্লাউনফিশের এই ছোট হয়ে যাওয়া সাময়িক।
পরিবেশ স্বাভাবিক হলে তারা আবার আগের আকারে ফিরে আসে।
ন counter নিউক্যাসল ইউনিভার্সিটির গবেষক মেলিসা ভার্সটেগ বলেন, “প্রাকৃতিক পরিবেশগুলো চাপের মধ্যে থাকলেও, তাদের মধ্যে অসাধারণ স্থিতিস্থাপকতা দেখা যায়।”
আবহাওয়ার পরিবর্তনের ফলে সমুদ্রের তাপমাত্রা বৃদ্ধি একটি গুরুতর সমস্যা।
এই পরিস্থিতিতে, ক্লাউনফিশের এই অভিযোজন ক্ষমতা তাদের জন্য স্বল্পমেয়াদে সহায়ক হতে পারে।
তবে, ভবিষ্যতে এই প্রক্রিয়া তাদের কতটা সাহায্য করবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়।
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সমুদ্রের তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতেও বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা যাচ্ছে।
সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, ঘূর্ণিঝড় এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে এখানকার জীববৈচিত্র্য হুমকির সম্মুখীন।
ক্লাউনফিশের এই অভিযোজন ক্ষমতা জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় আমাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ হতে পারে।
তথ্যসূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস।