ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ: ফুটবল বিশ্বে নতুন দিগন্তের সূচনা?
ফুটবল বিশ্বে ক্লাবগুলোর শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে নতুন মাত্রা যোগ করতে শুরু হলো ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ। যুক্তরাষ্ট্রের ১১টি শহরে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এই টুর্নামেন্টটির উদ্বোধন করা হয়েছে, যেখানে ৩২টি ক্লাব অংশ নিচ্ছে। ফিফা প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফান্তিনোর ব্যক্তিগত আগ্রহে আয়োজিত এই টুর্নামেন্ট ফুটবল ইতিহাসে নতুন পরিবর্তনের সূচনা করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
শনিবার, মায়ামি গার্ডেনসের হার্ড রক স্টেডিয়ামে টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচে ইন্টার মায়ামি ও মিশরের ক্লাব আল আহলির মধ্যেকার খেলাটি ০-০ গোলে ড্র হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সঙ্গীত, নৃত্য ও আতশবাজির ঝলকানি ছিল বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এই বিশাল আয়োজনের মাধ্যমে ইনফান্তিনো তার প্রভাবশালী অবস্থান আরও একবার প্রমাণ করলেন।
তবে এই টুর্নামেন্ট আয়োজন নিয়ে বিতর্কও কম হয়নি। ইউরোপিয়ান ক্লাবগুলো থেকে শুরু করে খেলোয়াড়দের অতিরিক্ত খেলার চাপ, ইনজুরি এবং ঘরোয়া লীগের উপর এর প্রভাব নিয়ে অনেক প্রশ্ন উঠেছে। ফিফার এই ধরনের পদক্ষেপের কারণে তারা জাতীয় দলের ফুটবলে বেশি মনোযোগ দিচ্ছে কিনা, সেই প্রশ্নও উঠেছে।
ইনফান্তিনো অবশ্য দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন, ক্লাব বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ও প্রিমিয়ার লীগের মতো জনপ্রিয় ও লাভজনক টুর্নামেন্ট হতে পারে। এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে, তিনি এই টুর্নামেন্টকে চার বছর পর পর নিয়মিতভাবে আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এমনকি ২০২৯ সালের আসরের জন্য প্যারিস সেন্ট জার্মেইনের মতো দলগুলো এরই মধ্যে যোগ্যতা অর্জন করেছে।
ফুটবলবোদ্ধারা বলছেন, ক্লাব পর্যায়ে এত বড় টুর্নামেন্টের আয়োজন ফুটবলপ্রেমীদের কতটা আকর্ষণ করবে, তা এখনো পরিষ্কার নয়। টিকিট বিক্রি নিয়েও কিছুটা অনিশ্চয়তা ছিল। তবে, উদ্বোধনী ম্যাচে ৬০,০০০ এর বেশি দর্শকের উপস্থিতি ফিফার জন্য স্বস্তিদায়ক ছিল। মিশর থেকে আসা আল আহলির সমর্থকেরা স্টেডিয়ামে লাল জার্সি পরে তাদের দলের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন।
আর্জেন্টিনার তারকা ফুটবলার লিওনেল মেসি ইন্টার মায়ামির হয়ে খেলার চেষ্টা করেছেন, কিন্তু আল আহলির গোলরক্ষক মোহামেদ এলশেনাওয়ির দারুণ পারফর্মেন্সে তিনি গোল করতে ব্যর্থ হন। মেসি যদি গোল করতে পারতেন, তাহলে হয়তো ইনফান্তিনোর এই আয়োজন আরও বেশি উজ্জ্বল হতে পারত।
এই ক্লাব বিশ্বকাপের মাধ্যমে ফুটবল বিশ্বে নতুন এক যুগের সূচনা হতে যাচ্ছে, যেখানে ক্লাব ফুটবলের গুরুত্ব আরও বাড়বে। এখন দেখার বিষয়, এই টুর্নামেন্ট কতটা সফল হয় এবং ফুটবলপ্রেমীদের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারে কিনা।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস (এপি)।