আশ্চর্য! ৭ কোটি বছর আগের ‘জীবন্ত জীবাশ্ম’ মাছের ছবি, যা আগে দেখা যায়নি!

ডাইনোসরের যুগকেও হার মানানো, ৭০ মিলিয়ন বছর আগে বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া একটি ‘জীবন্ত জীবাশ্ম’ মাছের দেখা পাওয়া গেছে ইন্দোনেশিয়ার জলভাগে। বিরল প্রজাতির এই মাছটির ছবি প্রথমবার ক্যামেরাবন্দী করেছেন বিজ্ঞানীরা। ইন্দোনেশিয়ার মালাক্কা দ্বীপপুঞ্জে (Maluku Archipelago) গভীর সমুদ্রের তলদেশে ডুবুরিরা খুঁজে পান এই বিরল প্রাণীটিকে।

এই আবিষ্কার জীববৈচিত্র্যের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত, যা প্রকৃতি প্রেমীদের মধ্যে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।

ইন্দোনেশিয়ান কোয়েলাকান্থ (Latimeria menadoensis) প্রজাতির এই মাছটিকে একসময় বিলুপ্ত বলেই মনে করা হতো। কিন্তু সম্প্রতি, গভীর সমুদ্রে অনুসন্ধানের সময় এর দেখা পাওয়া যায়।

গভীর সমুদ্রের প্রায় ১৪৫ মিটার নিচে, ডুবুরি অ্যালেক্সিস চাপুইসের (Alexis Chappuis) ক্যামেরায় ধরা পরে মাছটি। সুইস বিলাসবহুল ঘড়ি প্রস্তুতকারক কোম্পানি ব্ল্যাঙ্কপেইন (Blancpain) এই অভিযানের অর্থায়ন করেছে।

গভীর সমুদ্রের ডুব দেওয়া বেশ কঠিন, কারণ এতে ডিকম্প্রেশন অসুস্থতা (decompression sickness) হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

বিজ্ঞানীদের মতে, কোয়েলাকান্থ (Coelacanth) মাছের জীবাশ্ম প্রায় ৪০০ মিলিয়ন বছর আগের। ডাইনোসরেরও আগে এদের বিচরণ ছিল।

১৯৩৮ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার উপকূলে প্রথম এই মাছের সন্ধান পাওয়া যায়। এরপর ২০১৩ সালে লরেন্ট ব্যালেস্টা (Laurent Ballesta) দক্ষিণ আফ্রিকার সোডওয়ানা উপসাগরে (Sodwana Bay) অন্য একটি কোয়েলাকান্থ প্রজাতি, ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ওশান ল্যাটিমেরিয়া চালুমনা (West Indian Ocean Latimeria chalumnae)-এর ছবি তোলেন।

সেই সময় ধারণা করা হতো, এই মাছগুলি ডাইনোসরের সঙ্গেই বিলুপ্ত হয়ে গেছে।

ব্ল্যাঙ্কপেইনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মার্ক এ. হায়েকের মতে, “আমরা এমন সব সাহসী বৈজ্ঞানিক প্রকল্পকে সমর্থন করি, যা সমুদ্র সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।” তিনি আরও বলেন, “২০১৩ সালের লরেন্ট ব্যালেস্টারের আবিষ্কারের পর, আমরা এই আবিষ্কারে অত্যন্ত গর্বিত। কারণ, এটি আমাদের দুই দশকের বেশি সময়ের প্রচেষ্টার ফল।”

এই আবিষ্কার উত্তর মালুকু অঞ্চলের (North Maluku) জীববৈচিত্র্যের প্রমাণ দেয় এবং গভীর সমুদ্র ও তার পরিবেশ রক্ষার প্রয়োজনীয়তা আরও একবার মনে করিয়ে দেয়।

এই অঞ্চলের পরিবেশ রক্ষার জন্য, বিজ্ঞানীরা এই মাছের সঠিক অবস্থান গোপন রেখেছেন। বালির উদয়ানা বিশ্ববিদ্যালয় (Udayana University) এবং পাটিমুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের (Pattimura University) গবেষকরা এই অভিযানে সহযোগিতা করেছেন।

তথ্য সূত্র: পিপল (People)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *